এই সময়, মালদা: দিদিকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলতে দেখে একই ভাবে শোবার ঘরে আত্মঘাতী হলো নাবালিকা বোন। সরস্বতী পুজোর আগের রাতে শনিবার মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচল মহকুমার পুখুরিয়া থানার আড়াইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের কইড়িটোলা এলাকায়। এখনও পর্যন্ত আত্মহত্যার কারণ স্পষ্ট না হলেও প্রেমঘটিত বিষয়েই এই ঘটনা বলে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান। মৃতদেহ দু’টি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানোর ব্যবস্থা করে পুলিশ।
মৃতদের নাম সুস্মিতা মন্ডল (১৮) ও নেহা মণ্ডল (১৫)। সুস্মিতা স্থানীয় একটি কলেজের কলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তাঁর মামাতো বোন নেহা স্থানীয় একটি হাইস্কুলের নবম শ্রেণিতে পাঠরতা ছিল। আপন সহদোরা না হলেও দু’জনের মধ্যে খুব ভাব ছিল। কইরিটোলা গ্রামের পাশাপাশি দুই বোনের বাড়ি। এদিন রাতে সুস্মিতা বাড়ির লোকেদের অলক্ষ্যে শোবার ঘরে গলায় ওড়না জড়িয়ে আত্মঘাতী হন। বিষয়টি জানাজানি হতেই চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়। পাশের বাড়ি থেকে দৌড়ে আসে নেহা। দিদিকে এভাবে ঝুলতে দেখে কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে আসে নেহা। এরপর তারও ঝুলন্ত দেহ শোবার ঘর থেকে উদ্ধার হয়।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, মৃত দুই ছাত্রীর সঙ্গে এলাকার দুই যুবকের সম্পর্ক ছিল। বাড়িতে সুস্মিতার বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। কিন্তু তিনি বিয়েতে রাজি ছিলেন না। সেই কারণে এই আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে মৃত দুই ছাত্রীর পরিবারের লোকেরা পুলিশকে কিছু জানাননি।
সুস্মিতার কাকা ভরত মণ্ডল বলেন, ‘ওদের প্রেম-ভালোবাসার কথা জানতাম। কিন্তু তা বলে দু’জনেই একই সময়ে এ ভাবে আত্মঘাতী হবে, ভাবতেই পারছি না। বাড়িতে কোনরকম অশান্তি ছিল না। অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার কোনও চেষ্টা করা হয়নি। এই আত্মহত্যার ঘটনাটা আমাদের কাছে রহস্য।’
এ প্রসঙ্গে চাঁচলের এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘মৃত দুই ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে পরিষ্কার করে কিছু জানাতে পারেনি। মৃতারা মোবাইল ব্যবহার করত কি না, সেটি তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। মোবাইল হাত এলে অনেক সূত্র উঠে আসতে পারে।’