অরূপকুমার পাল ■ ঝাড়গ্রাম
স্কুলে বসে আর্ট পেপারে রং–তুলি দিয়ে মণ্ডপ সাজানোর জন্য ছবি আঁকতে ব্যস্ত আয়েশা খাতুন, নেহা খাতুন, কবিতা হাঁসদা, নীলমণি মুর্মুরা। আবার তালিকা নিয়ে ঘুরে ঘুরে পুজোর বাজার করছে প্রজ্ঞা খামরই, সরস্বতী হেমব্রম, সৃজিতা জানারা। আজ সোমবার সরস্বতী পুজো। রবিবার পুজোর মণ্ডপ থেকে শুরু করে গেট ও বিভিন্ন কাজ নিয়ে মেতেছে ঝাড়গ্রাম ননীবালা বালিকা বিদ্যালয়ের মেয়েরা। বছরের এই দিনটিতে সবাই মিলে আনন্দ করতে পারাটাই ভাগ্যের বলে মনে করে স্কুলের ছাত্রীরা। এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকে আয়েশা, নেহারাও।
এই স্কুলে এ বার সরস্বতী পুজোয় থিম ‘শিশু চেতনায় রবীন্দ্রনাথ।’ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অরুন্ধতী সেন বলেন, ‘প্রত্যেক বছর দশম ও একাদশ শ্রেণির মেয়েরা সরস্বতী পুজোর যাবতীয় দায়িত্ব সামলায়। এ বার ওরা তিনটে বিষয় নিয়ে আমার কাছে এসেছিল। তাতে মনে হয়েছে শিশু চেতনায় রবীন্দ্রনাথ থিমের উপরে ওদের কাজ করতে সুবিধা হবে। ওরা এতদিন রবীন্দ্রনাথের লেখা যা পড়েছে, দেখেছে তাকেই মণ্ডপ সজ্জায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছে।’
রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা নবম শ্রেণির আয়েশা বলে, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহজ পাঠের নানা আঁকা, অমল দইওয়ালা, কাবুলিওয়ালার নানা চিত্র মণ্ডপে ও গেটে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। সাদা আর্ট পেপারের উপর আমরা কালো রং দিয়ে এঁকে এ সব জিনিস তৈরি করছি।’ দশম শ্রেণির সৃজিতা বলে, ‘স্কুলের ফেলে দেওয়া বর্জ্য দিয়েও বিভিন্ন ধরনের জিনিস তৈরি করা হচ্ছে। সেগুলি দিয়ে সাজবে স্কুলের গেট। ফেলে দেওয়া জিনিসও যে পুনরায় ব্যবহার করা যায়, এখানে সেটাও দেখানো হয়েছে।’
এই স্কুলের ছাত্রীর সংখ্যা ১১০০। তার মধ্যে আদিবাসী, জনজাতি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। ঝাড়গ্রাম শহরের চাঁদাবিলায় বাড়ি বিজ্ঞান বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী কবিতা হাঁসদার। তার কথায়, ‘বাড়িতে সরস্বতী পুজো হয় না। তাই স্কুলের পুজোয় সবাই মিলে আমরা অংশগ্রহণ করি।’ ঝাড়গ্রাম শহরের কন্যাডুবার বাসিন্দা দশম শ্রেণির সরস্বতী বলে, ‘স্কুলেই প্রথম পুজো দেবো। তারপর আমাদের পাড়ায় পুজোতে আনন্দ করব। গত দশ দিন ধরে কাজ করছি। কখনও স্কুলে চাদর বিছিয়ে ছবি এঁকেছি। আবার কখনও বাজার যেতে হয়েছে। সব মিলিয়ে একটা নতুন অনুভূতি হচ্ছে।’