I-PAC ও তৃণমূলেরই একাংশকে তীব্র নাশানা করলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গেও বিস্ফোরক দাবি মদনের। তাঁর সরাসরি অভিযোগ, মন্ত্রিপদ পেতে তৃণমূলে কোটি কোটি টাকার ঘুষ নেওয়া চলছে। অভিষেক ইস্যুতে মদনের তাত্পর্যপূর্ণ মন্তব্য, 'রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়।'
এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে তৃণমূলের শীর্ষ মহলে ক্ষমতার রাশ টানতে অভিষেক প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "পার্টির লোকেরা বলছেন, বাইরের লোকেরা বলছেন... তুমি কি অভিষেকের? তুমি কি মমতার?" অভিষেক বয়সে অনেক ছোট। দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছে, মাঝে মাঝে ওর ট্যুইট দেখি। অসুস্থ ছিল, বিদেশেই ছিল অনেকদিন। রোডে নেবে কতটা কি করতে পারবে! মাঝেমধ্যে ফোন করে বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিস থেকে বলছি, এটা করতে হবে। রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়।'' তাঁর আরও দাবি, ২০২১ এর আগেই এটি শুরু হয়েছিল। টাকা নিয়েও নমিনেশন দেওয়া হয়নি। লোককে কাঁদতে দেখেছি।
দলের মধ্যে টাকা দিয়ে পদ পাইয়ে দেওয়ার প্রশ্নে মদন আরও বলেন, "দলের মধ্যে ব্যাপক টাকার লেনদেন হচ্ছে। আমি মদন মিত্র একজন এমএলএ ছিলাম। আমার কোনও ক্ষমতাই ছিল না। রাতারাতি আমি এখন ১০০ কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছি। তা এখন আমার পদ চাই। তা আমি বললাম ভাই আমায় একটা মন্ত্রী করে দে। না ভাই, মন্ত্রী হতে গেলে, ভাল মন্ত্রী হতে গেলে ১০ কোটি লাগবে, আমি ১০ কোটি দিয়ে দিলাম। মন্ত্রী হল কী হল না পরের কথা। যদি হয়ে গেলাম তাহলে ১০ কোটি থেকে ২০ কোটি বানালাম, আর যদি না হলাম ১০ কোটি চলে গেল। এফআইআর করা যায় না। কারণ, এর কোনও ডকুমেন্টস নেই।''
মদনের আরও অভিযোগ, শুধু মন্ত্রী নয় তৃণমূলে সাংগঠনিক পদের নেপথ্য়েও টাকার খেলা চলছে। এরমধ্যে নীচু তলার পদ, ব্লকের পদ, সমিতির পদ, পঞ্চায়েতের পদ থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের পদ, জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইত্যাদি হওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকায় উঠে যাচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমে তাঁর আরও অভিযোগ, "এমন মন্ত্রী আছেন, যাঁরা মানেন ও মন্ত্রীমশাই, ষড়যন্ত্রী মশাই। মানে ভালই দুধে-ভাতে আছে। চকচকে জুতো পরে গাড়ি থেকে নামছে, ভাল আছে। এইটা আমি বুঝে গেছি, এতদিন রাজনীতি করার পর, সব বাবা-মা ধৃতরাষ্ট্র-গান্ধারী।....."
তাঁর নিশানায় ছিল অভিষেক ঘনিষ্ঠ আই-প্যাকও। প্রার্থী করে দেওয়ার ক্ষেত্রে টাকা নেওয়া হয়েছে? এ প্রসঙ্গে আইপ্যাককে নিশানা করে কামারহাটির বিধায়কের দাবি, "সবটাই আইপ্যাক করেছে। আইপ্যাকই পরিস্থিতিটা তৈরি করেছে। ওরা কিছু লোকের নামে রেকমেন্ডেশন করে চলে গিয়েছে। ভোটে লড়াই করেছে আমাদের ছেলেরা। আইপ্যাকের ছেলে কোথায়? আইপ্যাক মানে প্য়াক আপ।"
এছাড়াও, পুলিশি নিরাপত্তায় সরস্বতী পুজোয় যোগেশচন্দ্র ল' কলেজে তৃণমূল যুব নেতা সাব্বির আলির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেন মদন মিত্র। বলেন, সাব্বির আলি পেটালে বিভেদের রাজনীতি হয় নাকি? উত্তম কুমার বাঁশ দিয়ে মারলে ভালো হত? বাংলায় হিন্দু, মুসলিমদের কোনও বিভেদ নেই।