সরস্বতী পুজোতে শাড়ি ও পাঞ্জাবির বাহার বহরমপুরে, ভিড় চারিদিকেই
বর্তমান | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: সরস্বতী পুজো উপলক্ষ্যে সোমবার মেতে উঠল নবাবি মুলুক। সকাল থেকেই শাড়ি ও বাহারি পাঞ্জাবিতে সেজে রাস্তায় নামল সদ্য যুবকরা। বহরমপুর শহরের ব্যারাক স্কোয়ার ময়দান, লালদিঘি, ভাগীরথী নদীর ধার, কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ি, পাতালেশ্বর মন্দির, বিষ্ণুপুর বিলের ধারে ব্যাপক ভিড় হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ে ভিড়ও। বিকেল থেকে শপিংমল ও সিনেমা হলগুলি উপচে উঠতে শুরু করে। শহরের বেশ কিছু নামী স্কুল ও কলেজে এদিন সরস্বতী পুজো হয়। সেখানেও পড়ুয়ারা সেজেগুজে শামিল হয়। কান্দি, ডোমকল, জঙ্গিপুর ও লালবাগ থেকে বহরমপুর সদরে যুবক যুবতীরা ঘুরতে আসেন। রেস্টুরেন্টগুলোতেও ব্যাপক ভিড় হয়। সরস্বতী পুজো হল বাঙালির ভ্যালেন্টাইন ডে। তরুণ তরুণীদের মন দেওয়া নেওয়ার, লাল গোলাপ দিয়ে কাঙ্খিত নারীকে প্রপোজ করার আদর্শ দিন। বহরমপুরের ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে ফুলের দোকান বসিয়ে ব্যাপক লাভবান হয় এক যুবক। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে বলেই দাবি তাঁর। বহু যুবক লাইন দিয়ে তাঁর থেকে গোলাপ ও ক্যালেন্ডুলা ফুল কিনেছে। বহরমপুরের বাসিন্দা সুদীপ রায় বলেন, এটাই আমাদের ভালোবাসার মরশুম। বান্ধবীকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছি। এত সুন্দর করে শাড়ি পড়েছে, দেখে তো আমি অবাক। তাই ফুল দিয়ে ভালোবাসা নিবেদন করলাম।
শহরের বেশ কিছু স্কুলে এদিন পুজো দেখতে ছাত্রছাত্রীরা ভিড় জমায়। পড়ুয়াদের ভিড়ে শহরের গির্জা মোড়ের কাছে যানজট শুরু হয়। বাড়তি ট্রাফিক পুলিস নামাতে হয় রাস্তায়। লালদিঘির পাড়ে ঘুরতে এসে হরিহরপাড়ার টিনা সরকার বলেন, গার্লস কলেজের পুজো দেখতে এসে শহরের বেশ কিছু স্কুলে ঠাকুর দেখলাম। এখন বান্ধবীদের সঙ্গে এই পার্কে এসেছি। বিকেলে রেস্টুরেন্টে খেয়ে বাড়ি ফিরব। মোহন মোড়ের কাছে একটি মলে এসে রিম্পা দাস বলেন, একটা বাংলা সিনেমা দেখার জন্য হলে এসেছি। বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে সারাদিন শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরলাম। সন্ধেবেলা সিনেমা দেখে বাড়ি ফিরব। ব্যারাক স্কোয়ার ময়দানে এসে সহেলী ঘোষ, দীপান্বিতা রায়, জয়িতা মণ্ডলরা বলেন, দু’ দিন ধরে পুজো হওয়ায় আমাদের সুবিধা হয়েছে। রবিবার কলেজের পুজো নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সোমবার ঘুরতে বেরিয়েছি। আমরা প্রায় আটজন এখানে এসেছি। প্রচুর ছবি তুলছি ও রিল বানাচ্ছি। আনন্দ হচ্ছে। কাল থেকে তো আবার পড়াশোনায় ফিরতে হবে। আজকে তাই চুটিয়ে ঘোরাঘুরি ও খাওয়া দাওয়া করছি। বহরমপুরের এক ফুড জংশনের কর্ণধার অরিজিৎ গুপ্ত বলেন, এই দু’দিন ভালোই ভিড় হয়েছে। অঞ্জলি দিয়ে অনেকেই নিরামিষ খায়, সেজন্য আমরা ভেজ আইটেমে জোর দিয়েছিলাম। বার্গার, পিজ্জার প্রতি বিশেষ আকর্ষণ ছিল যুবক যুবতীদের। এদিকে, সরস্বতী পুজোর দিনও জেলাজুড়ে বাইক দৌরাত্ম্য বহাল রইল। বাইক নিয়ন্ত্রণে নাজেহাল হতে হল পুলিসকে। ইসলামপুর ও সালার থানা এলাকায় পৃথক দু’টি বাইক দুর্ঘটনায় দুই যুবক জখম হয়েছেন। তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।