বোলপুরের স্কুলে সরস্বতী পুজো বন্ধ প্রতিবাদ বাসিন্দাদের, ব্যাপক বিক্ষোভ
বর্তমান | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বোলপুর: সরস্বতীপুজোয় অঞ্জলি দিতে সকাল সকাল ফুল নিয়ে স্কুলে হাজির হয়েছিল খুদে পড়ুয়ারা। কিন্তু অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে স্কুলে সরস্বতী পুজোর আয়োজনই করা হয়নি। এঘটনায় প্রবল ক্ষোভ ছড়াল বোলপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিচু বাঁধগোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্থানীয়দের দাবি, প্রধান শিক্ষক সবাইকে জানিয়েছিলেন, স্কুল প্রাঙ্গণে পুজো বাধ্যতামূলক নয়। তাই পুজো বন্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনে বিদ্যার দেবীর আরাধনা না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রাক্তনীদের রোষের মুখে পড়েন প্রধান শিক্ষক। তিনি স্কুলে উপস্থিত হতেই এলাকাবাসী ও প্রাক্তনীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পরিস্থিতি সামলাতে উপস্থিত হন বীরভূম জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রলয় নায়েক এবং বোলপুর থানার পুলিস। অবশেষে স্কুলে পুজো আয়োজন করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
যদিও প্রধান শিক্ষকের দাবি, বিষয়টির ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, বেশ কয়েকজন শিক্ষক অসুস্থ ছিলেন। তাই পুজো আয়োজনে দেরি হয়েছে।
সরস্বতী পুজো বলে কথা। প্রতিবছরের মতো এবারও স্কুলের কচিকাঁচারা সেজেগুজে ফুল নিয়ে স্কুলে এসেছিল। কিন্তু এসে দেখে স্কুলের গেট বন্ধ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গেটের বাইরে পড়ুয়াদের ভিড় বাড়ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে স্কুলের প্রাক্তনীরা খোঁজখবর শুরু করেন। তখনই তাঁরা শুনতে পান, প্রধান শিক্ষক নাকি ফতোয়া জারি করেছেন, বাধ্যতামূলক না হওয়ায় এবছর স্কুলে সরস্বতীপুজো হবে না। এলাকার এক প্রবীণ ব্যক্তি বিষয়টি ভিডিও করে ক্ষোভের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন। এরপরই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলের অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। তাঁকে সামনে পেয়ে এলাকার বাসিন্দারা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে বোলপুর থানার পুলিস ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। ততক্ষণে পুজোর তিথি ও লগ্ন অতিক্রান্ত হওয়ায় জনতার রোষ বাড়তে থাকে। বেগতিক দেখে শিক্ষকদের একাংশ গেটের বাইরেই পুজো শুরু করে দেন। কিন্তু তাতে স্থানীয়রা আপত্তি তোলেন। এরপর প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যানের উদ্যোগে স্কুল প্রাঙ্গণে পুজো শুরু হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এই স্কুলে ৭৫জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন পাঁচজন। দীর্ঘকাল ধরে স্কুলে সরস্বতী পুজো আয়োজন হয়ে আসছে। কিন্তু এবছর পুজোর আয়োজন না হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন।
এই স্কুলের প্রাক্তনী সুবল ঘোষ বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাগদেবীর আরাধনা অত্যন্ত সাধারণ বিষয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষকের ফতোয়ায় এবার পুজো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। আমরা প্রতিবাদ করেছি বলেই তা আয়োজন করা গিয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংসদের চেয়ারম্যান বলেন, স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকদের কথায় যুক্তি রয়েছে। শেষমেশ পুজো হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে বৈঠক করা হবে।