বিনপুরের বিদ্যালয়ে সবুজায়ন ও প্রকৃতি রক্ষার পাঠ নজর কাড়ছে
বর্তমান | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: বিনপুর-২ ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় রয়েছে লালডাঙা নিস্তারিণী বিদ্যামন্দির। এই বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রী জনজাতি পরিবারের। সবুজায়নের লক্ষ্যে এই বিদ্যালয়ের ‘গো গ্রিন’ প্রকল্প নজর কেড়েছে। স্কুল চত্বর গাছগাছালিতে ভরিয়ে তোলা হয়েছে। সবুজায়নের জন্য রাজ্যের জীববৈচিত্র্য পর্ষদের তরফে এই স্কুলকে টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে। সোমবার সরস্বতী পুজোর প্রার্থনায় পড়ুয়াদের কণ্ঠে উচ্চারিত হল অরণ্যের বৃক্ষকে বাঁচিয়ে রাখার শপথ।
১৯৬৬ সালে এই বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছিল। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে স্মরণীয় হয়ে আছেন প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক দেবীপ্রসাদ সেনগুপ্ত। ২০১১সালে স্কুলটি উচ্চমাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। এখানে ৬১৫জন পড়ুয়া রয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর সংখ্যা ১৯জন। ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগই তফশিলি উপজাতিভুক্ত পরিবারের। বিদ্যালয়ের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ পড়ুয়াদের লেখাপড়ায় আগ্রহ বাড়িয়ে তোলে। স্কুলের ৩৬বিঘা জায়গাজুড়ে ফুল, ফল, সব্জির বাগান রয়েছে। মিড-ডে মিলের খাবারের জন্য বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, পেঁপে, ওল, পালং, লালশাক, লেবু, ধনেপাতা জৈব পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে। ৭০০বর্গফুট জায়গায় ডালিয়া, গাঁদা সহ অন্য বাহারি ফুলগাছ রয়েছে। স্কুল চত্বরে হাজারটি আমগাছ, ৩০০ কাঁঠাল ও ৪০টি নারকেল গাছ রয়েছে। দু’টি পুকুর আছে। অন্য বিষয় পড়ানোর পাশাপাশি প্রকৃতিরক্ষার পাঠ দিচ্ছেন স্কুলের শিক্ষকরা। এই স্কুলের ‘গো গ্ৰীন’ প্রকল্পে সবুজায়ন ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দাদেরও নজর কেড়েছে। স্কুলে সবুজায়নের জন্য রাজ্যের জীববৈচিত্র্য পর্ষদ স্কুলকে ৬৭হাজার টাকা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন ত্রিপাঠী বলেন, আমাদের এই স্কুল অরণ্য এলাকার মধ্যে রয়েছে। এই এলাকায় যে সমস্ত ছেলেমেয়ে বড় হয়ে ওঠে, তাদের সঙ্গে প্রকৃতির নিবিড় যোগ থাকে। সেই যোগ রক্ষা করতে আমরা উদ্যোগী হয়েছি। বিদ্যালয় চত্বর ফুল, ফল সহ নানারকম গাছে ভরিয়ে তোলা হয়েছে। এতে পড়ুয়াদেরও খুব ভালো লাগছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও স্কুলে উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে সরস্বতী পুজো হয়েছে। সেই উৎসবেও গাছ বাঁচানোর বার্তা বাদ যায়নি। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিভাসরঞ্জন হালদার বলেন, এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মূল লক্ষ্য, পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে প্রকৃতির শিক্ষার মেলবন্ধন ঘটিয়ে তোলা। পড়ুয়ারা এদিন বন বাঁচানোর শপথ নিয়েছে।-নিজস্ব চিত্র