নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: গ্রামীণ হাওড়া আর পূর্ব মেদিনীপুরের সীমানায় রঙিন ক্ষীরাই আজ সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বেশ জনপ্রিয়। রংবেরঙের ফুলে মোড়া উপত্যকা ভ্রমণপিপাসু বাঙালির একদিনের ডেস্টিনেশন হয়ে উঠেছে। এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে রানাঘাট দুই ব্লকের চাপড়া। বিঘের পর বিঘে জমিতে এখানে ফুল চাষ হয়। তাকে কেন্দ্র করে ‘ফ্লাওয়ার ভ্যালি’ গড়ে পর্যটকদের নতুন গন্তব্য করে তোলার ভাবনা রয়েছে প্রশাসনের। যা বাস্তবায়িত হলে, একদিকে যেমন স্থানীয় ফুল চাষকে তুলে ধরা যাবে, তেমনই স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হবে।
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, হিজুলি ১ পঞ্চায়েত এলাকায় গড়ে তোলা হবে এই ‘ফ্লাওয়ার ভ্যালি’। কারণ চাপড়ার আদিগন্ত জমিতে ফুল চাষ হয়। গাঁদা, রজনীগন্ধা, ক্যালেন্ডুলা, চন্দ্রমল্লিকা সহ বিভিন্ন ফুল চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করেন স্থানীয় মানুষ। ফুলের মরশুমে চাপড়া ঢেকে যায় রঙের চাদরে। এই বিষয়টিকে কাজে লাগিয়েই ওই এলাকায় পর্যটক টানতে তৎপর ব্লক প্রশাসন। বিষয়টি পরিকল্পনা স্তরে থাকলেও ঠিক করা হয়েছে, ফ্লাওয়ার ভ্যালি গড়ে তোলা হবে চাপড়ার নির্দিষ্ট একটি অঞ্চলে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের ফুলের সমারোহের মাঝে থাকবে সৌন্দর্যমণ্ডিত একাধিক কটেজ। ফুলের উপত্যকার মাঝে একদিন ছুটি কাটানোর সমস্ত রকম পরিকাঠামো থাকবে। ইতিমধ্যেই হিজুলি ১ পঞ্চায়েত এলাকায় খাসজমির খোঁজ শুরু করেছে ব্লক প্রশাসন। পর্যাপ্ত জমি মিললেই তৈরি হবে ডিপিআর। পরিকল্পনা অনুযায়ী ফুলের উপত্যকা গড়ে তোলা গেলে, বাইরে থেকে ভ্রমণপিপাসুরা আসবেন। ফুল চাষের সঙ্গে যুক্ত মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উপকৃত হবেন। শুধু তাই নয়, চাষের ফুল বিকিকিনির জন্য নোকাড়িতে যে ফুল বাজার রয়েছে সেটিকেও পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা যাবে। রাজস্ব আসবে সেখান থেকেও। চাপড়া ‘ফ্লাওয়ার ভ্যালি’ তৈরির উপযোগী, কারণ ওই এলাকা দিয়েই গিয়েছে রানাঘাট-দত্তপুলিয়া-কৃষ্ণনগর রোড। চওড়া রাস্তার কারণে যাতায়াতের সুযোগ সুবিধাও রয়েছে প্রচুর। এছাড়াও চাষের জমি মাঝখান দিয়েও রয়েছে চাপড়ার গ্রামগুলিতে যাওয়ার রাস্তা। পর্যাপ্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি থাকায় খুব একটা বেগ পেতে হবে না প্রশাসনকে। বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট ২ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শুভজিৎ জানা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি ক্ষীরাইয়ের মতো ফুলের উপত্যকা গড়ে তুলতে। কারণ আমাদের এখানেও প্রচুর জমিতে ফুলের চাষ হয়। বিঘের পর বিঘে ফুলের চাষকে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে এই উপত্যকা তৈরি সম্ভব। সরকারি জমি পেলে আমরা সেখানে কটেজ তৈরি করার চেষ্টা করব। যাতে একদিনের জন্য ভ্রমণপিপাসুরা এসে সেই উপত্যকার মাঝে থাকতেও পারেন। সরকারি জমি খোঁজ চলছে। তা মিললে বাকি পরিকল্পনা করা সম্ভব। -নিজস্ব চিত্র