ব্যাগ-বই, জুতো-বল নেই, বন্ধের মুখে ছাত্রীর পড়াশোনা ও খেলাধুলো
বর্তমান | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট থেকে ফুটবলের প্রতি ঝোঁক। খালি পায়েই চা বাগানের মাঠে এতদিন ফুটবল প্র্যাকটিস করেছে সে। কিন্তু আর তা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, বুট ছাড়া টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগ মিলছে না। তাছাড়া জার্সি কেনারও সামর্থ্য নেই জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের বাসিন্দা বেগম ফয়জেন্নেসা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী আনিশা মুন্ডার। বাবা রূপেশ মুন্ডা পরিযায়ী শ্রমিক। মা রঞ্জিতা চা বাগানের বিঘা শ্রমিকের কাজ করেন। ফলে রোজ কাজ জোটে না। সবমিলিয়ে খেলাধুলোর সঙ্গে আনিশার পড়াশোনাও বন্ধ হতে বসেছে।
ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের ১০ নম্বর লাইনের বাসিন্দা ওই ছাত্রীর কথায়, এবার দশম শ্রেণিতে উঠেছি। অনেকগুলি টাকার বই কিনতে হবে। কিন্তু একটা বইও এখনও কিনতে পারিনি। স্কুলের ব্যাগটাও ছিঁড়ে গিয়েছে। ফলে নতুন ক্লাসে এখনও যাওয়া হয়ে ওঠেনি। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মিমি রায় বলেন, মেয়েটির আধার কার্ডে ভুল ছিল। স্কুলের তরফে তা ঠিক করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেয়েটির এখনও এসটি শংসাপত্র নেই। সেটাও করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আনিশা পড়াশোনায় ভালো। তার যাতে পড়াশোনা ও খেলাধুলো বন্ধ না হয়, সে ব্যাপারে যথাসম্ভব চেষ্টা করছি আমরা।
আনিশা বলে, জার্সি নেই। বুটও নেই। চা বাগানের মাঠে ফুটবলের একটা কোচিং ক্যাম্প চলে। সেখানে খালি পায়ে প্র্যাকটিস করি। কিন্তু বুট, জার্সি ছাড়া টুর্নামেন্ট খেলতে যাব কীভাবে? হয়তো আমার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নটা অধরাই থেকে যাবে।
আনিশার মা রঞ্জিতার কথায়, মেয়ে পড়াশোনা করতে চায়। ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে এগতে চায় জীবনে। কিন্তু আমরা তো অতকিছু কিনে দেওয়ার সামর্থ্য নেই। কী হবে জানি না!
আনিশার ফুটবল কোচ অমিত রায় বলেন, মেয়েটির মধ্যে প্রতিভা আছে। একটু সহযোগিতা পেলে হয়তো ও ফুটবলে যথেষ্ট সাড়া ফেলতে পারবে।
জলপাইগুড়ি সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিনয় রায় বলেন, মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে শীঘ্রই যোগাযোগ করা হবে। পড়াশোনা ও খেলাধুলো চালিয়ে যেতে আমাদের তরফে কোনওভাবে তাকে সাহায্য করা যায় কি না দেখছি। নিজস্ব চিত্র।