সাত দিনে ১৩ লক্ষ পার, ভিড়ের নয়া রেকর্ড গড়বে বইমেলা!
বর্তমান | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
অলকাভ নিয়োগী, বিধাননগর: অ্যান্ড্রয়েড অথবা আইফোন, গুগল এখন সবার পকেটে। আঙুল ছোঁয়ালেই বেরিয়ে আসছে হাজার তথ্য। কিন্তু, প্রচ্ছদে মোড়া রঙিন মলাট, বাদামি পাতায় প্রিয় লেখকের লেখা অক্ষর, সে স্বাদ অন্য কিছুতে নেই। তাই মুঠোফোন ও পিডিএফ বাজার দখল করলেও বইয়ের বিকল্প একমাত্র বই-ই। তারই প্রমাণ দিচ্ছে বইমেলার ভিড়। উদ্বোধন থেকে গত সাতদিনে আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলায় উপস্থিত হয়েছেন ১৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ! এর মধ্যে শনি, রবি ও সোম, এই তিনদিন এসেছেন প্রায় ন’লক্ষ মানুষ। মেলা চলাকালীন মাস মাইনে পড়ে যাওয়ায় বিক্রিও আরও বেড়েছে বলে মনে করছেন বিক্রেতারা। গিল্ডের আশা, এবার নয়া রেকর্ড গড়তে চলেছে বইমেলার ভিড়।
গতবছর অর্থাৎ ৪৭তম আন্তর্জাতিক কলকাতায় বইমেলায় এসেছিলেন প্রায় ২৭ লক্ষ বইপ্রেমী। বিক্রি হয়েছিল ২৩ কোটি টাকার বই। এবার ২৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ৪৮তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিবারই প্রথমদিকে ভিড় কম হয়। শেষের দিকে তা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পাবলিসার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ড জানিয়েছে, উদ্বোধনের দিনই মেলায় এসেছিলেন প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। পরের দিন, ২৯ জানুয়ারি এসেছিলেন প্রায় ৭০ হাজার। ৩০ জানুয়ারি ভিড় স্পর্শ করে এক লক্ষ। ৩১ জানুয়ারি দেড় লক্ষ ছাড়িয়ে যায়।
প্রথম ছুটির দিন ছিল শনিবার, এক ফেব্রুয়ারি। ওইদিন থেকেই বইমেলায় জনপ্লাবন। এসেছিলেন প্রায় দু’লক্ষ মানুষ। পঞ্চমী তিথিতে মেলার প্রথম রবিবার হাজির প্রায় চার লক্ষ। সোমবারও সরকারি স্কুল-কলেজ ছিল ছুটি। এদিনও জনপ্লাবন। প্রায় তিন লক্ষ মানুষ এসেছিলেন। সবমিলিয়ে ২৮ জানুয়ারি থেকে তিন ফেব্রুয়ারি, এই সাতদিনে উপস্থিত ১৩ লক্ষেরও বেশি বইপ্রেমী। পাবলিসার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক সুধাংশুশেখর দে বলেন, ‘ভিড় ও উন্মাদনায় কলকাতা বইমেলা বাঙালির দ্বিতীয় দুর্গোৎসব। এবার খুব ভালো ভিড় হচ্ছে। আমরা চাই, বই কেনার এই ভিড় আরও বাড়ুক। তাহলে বইও দীর্ঘজীবী হবে। আমরা আশা করছি, এই ডিজিটাল যুগেও ভিড়ের নতুন রেকর্ড গড়বে কলকাতা বইমেলা।’ গিল্ডের সভাপতি ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘শুধু ১৩ লক্ষ ভিড় ছাড়িয়ে গিয়েছে তা নয়, এবার স্টলে বইও ভালো বিক্রি হচ্ছে। এর একটা কারণ, মাস মাইনে। গতবার ১৮ জানুয়ারি মেলা শুরু হয়েছিল। শেষ হয়েছিল ৩১ জানুয়ারি। ফলে মাসের মাইনে না হওয়ায় অনেকের ইচ্ছে থাকলেও বেশি বই কিনতে পারেননি। কিন্তু এবার আর সেই সমস্যা নেই। নতুন মাস পড়ে গিয়েছে। বই বিক্রিও লাফিয়ে বাড়ছে। তাই এবার রেকর্ড বিক্রি হবে।’