নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: প্রায় তেরো ফুট উচ্চতার মূর্তি। তবে সরস্বতী নয়, শুক্লা পঞ্চমীর আগের দিন পুজো হয় সিদ্ধিদাতা গণেশের। এই পুজো চলে এক মাস ধরে। পুজো উপলক্ষ্যে হয় অন্নকূট উৎসব। তাতে পাত পড়ে কয়েক হাজার মানুষের। সরস্বতী পুজোর প্রাক্কালে অকাল গণেশ চতুর্থীর এই ছবি দেখা গেল হাওড়ার শিবপুরে। ৭১ বছর ধরে চলে আসছে এই পুজো।
১৯৫০ সাল নাগাদ হাওড়ার শিবপুর বাজারের আনাজ বিক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা ঠিক করেন, গণেশ পুজো করবেন। তবে গণেশ চতুর্থীর সময় নয়, শুক্লা পঞ্চমীর আগের দিন এই পুজো করার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। ৭১ বছর আগে শুরু হওয়া সেই পুজো আজ আড়ে বহরে বেড়ে উঠেছে অনেকটাই। শিবপুর বাজারপল্লিতে স্থানীয় প্রভাত সঙ্ঘের পরিচালনায় এই পুজো করা হলেও উদ্যোক্তারা হলেন মূলত বাজারের ব্যবসায়ীরাই। প্রতিমার উচ্চতা প্রায় ১৩ ফুট। বাজারপল্লির স্থায়ী মন্দিরেই হয় এই পুজো। শুক্লা পঞ্চমীর আগের দিন অর্থাৎ চতুর্থীতে মূল পুজো অনুষ্ঠিত হলেও একমাস ধরে প্রতিমা রাখা হয় মন্দিরে। প্রতিদিনই চলে গণপতির আরাধনা। এই এক মাসের মধ্যে কোনও একটি বিশেষ দিন বেছে নিয়ে পালন করা হয় অন্নকূট উৎসব। সেখানে আজও পুরনো রীতি মেনে নিজেদের দোকান বা গোডাউন থেকে সাধ্যমতো চাল, ডাল, আনাজ সহ বিভিন্ন সামগ্রী দেন ব্যবসায়ীরা। অন্নকূটের দিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত পাত পেড়ে খাওয়ানো হয় হাজার হাজার মানুষকে। মেনুতে থাকে খিচুড়ি, সব্জি, ভাজা, পায়েস, চাটনি।
পুজোর আয়োজকদের কথায়, গণেশ চতুর্থীর সময় মহারাষ্ট্রে বিরাট উৎসব হয়। কিন্তু সেই সময় পুজো না করে শুক্লা চতুর্থী তিথিতে গণপতি উৎসব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এত বড় গণেশ পুজো সচরাচর এই সময় এরাজ্যে হয় না। পুজোর দায়িত্বে থাকা শৈবাল দত্ত, বাসুদেব রায়, সুহাস জানারা বলেন, ‘এক সময় গণপতি পুজোর অন্নকূট উৎসবে রান্নার জন্য শ’য়ে শ’য়ে চালের বস্তা, আনাজের পাহাড় তৈরি হতো। পুজোর এক আলাদা জাঁকজমক ছিল। বর্তমানে লোকবলের অভাব।’ সরস্বতী ঠাকুর দেখতে গিয়ে এদিন গণেশ দর্শনের সুযোগ হাতছাড়া করলেন না ভক্তরা। শুক্লা পঞ্চমীতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির ফাঁকে শিবপুর বাজারের গণপতি পুজো দেখতে ভিড় করেছিলেন অনেকেই। নিজস্ব চিত্র