মেয়েকে কটূক্তি, প্রতিবাদ করে আক্রান্ত ছাত্রীর বাবা
বর্তমান | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: সোমবার ভরদুপুর। স্কুলের সরস্বতী প্রতিমা দর্শন করে বাবার সঙ্গে ফিরছিল এক নাবালিকা ছাত্রী। বাবার সামনেই তাকে কটুক্তি করে তিন নাবালক। প্রতিবাদ করতেই ছাত্রীর বাবাকে বেধড়ক মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই তিনজনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার রামরাজাতলার একটি স্কুলের সামনে। রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রীর বাবাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তিন অভিযুক্ত নাবালকের মধ্যে দুজনকে আটক করেছে চ্যাটার্জিহাট থানার পুলিস।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে রামরাজাতলার রামচরণ শেঠ রোডের একটি স্কুলে পুজো দেখতে এসেছিল সাঁতরাগাছি এলাকার বাসিন্দা ওই ছাত্রী। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ ছাত্রীর বাবা তাকে নিতে স্কুলের সামনে আসে। সে সময় স্কুলের উল্টোদিকেই দাঁড়িয়েছিল তিন নাবালক। ছাত্রীকে বাবার সঙ্গে দেখে তিনজন একের পর এক কটুক্তি করতে শুরু করে বলে অভিযোগ। ছাত্রীর বাবা প্রতিবাদ করতে এগিয়ে যান। আর তখনই তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তিন নাবালক। অভিযোগ, এক নাবালক নিজের হাতের লোহার বালা খুলে সেটি দিয়ে ছাত্রীর বাবার মাথায় একের পর এক আঘাত করতে থাকে। মারের চোটে তাঁর মাথা ও মুখ ফেটে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। আচমকা এই ঘটনা ঘটতেই স্তম্ভিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দা থেকে পথচারীরা। এরপর স্থানীয়রা ছুটে এসে ওই তিন নাবালককে ধরতে গেলে তাদের মধ্যে একজন পালিয়ে যায়। দুজনকে রীতিমতো উত্তম মধ্যম দেন তারা। খবর দেওয়া হয় চ্যাটার্জিহাট থানায়। পুলিস এসে অভিযুক্ত দুই নাবালককে থানায় নিয়ে যায়। জখম অবস্থায় ছাত্রীর বাবাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। তবে এদিন সন্ধ্যে পর্যন্ত নাবালিকার পরিবারের তরফে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
হাওড়া সিটি পুলিসের এক কর্তা বলেন, ‘ওই স্কুল ছাত্রী ও তিন অভিযুক্তদের প্রত্যেককেই নাবালক। দুজনকে আটক করা হয়েছে। অপর একজনের খোঁজ চলছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এদিকে ছাত্রীর বাবার ওপর আক্রমণের ঘটনায় এদিন দুপুরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায় রামরাজাতলার পুরনো বাসস্ট্যান্ড চত্বরে। ঘটনার জেরে যানজট লেগে যায় এলাকায়। এক স্কুল ছাত্রীর অভিভাবিকা দীপিকা সরকার বলেন, ‘যেভাবে দিনে দুপুরে ছেলেগুলো মেয়েটির বাবার ওপরে আক্রমণ চালাল, তাতে রীতিমতো শিউরে উঠছি। স্কুলের সামনে এই ধরনের ঘটনা ভাবাই যায় না। আমরা চাই পুলিস অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।’