• ক্যাম্পাসে সরস্বতী পুজোয় ‘না’ প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষের, বিতর্ক
    এই সময় | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে সরস্বতী পুজোর অনুমতি না দেওয়া নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। একদিকে যখন যোগেশচন্দ্র চৌধুরী কলেজে সরস্বতী পুজো হলো একেবারে সশস্ত্র পুলিশি ঘেরাটোপে, সেখানে প্রেসিডেন্সিতে অভিযোগ উঠল পড়ুয়াদের ক্যাম্পাসে পুজো করার অনুমতিই দেননি কর্তৃপক্ষ।

    পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, অনুমতি না দেওয়ার যুক্তি হিসেবে বলা হয়েছে, ক্যাম্পাসে পুজোর কোনও ঐতিহ্য নেই প্রেসিডেন্সির। শেষে বাধ্য হয়েই আয়োজক পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসের গেটের বাইরে পুজোর আয়োজন করেছেন।

    চলতি বছর জানুয়ারির একেবারে শেষের দিকে কিছু পড়ুয়া প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে সরস্বতী পুজো করতে চেয়ে উপাচার্য নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তীর কাছে অনুমতি চান। পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, ভিসি তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন এবং জানান এ বিষয়ে যা ‍সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি নেবে।

    সেই অনুযায়ী পুজোর আবেদন কমিটির কাছে যায়। ৩১ জানুয়ারি যখন পড়ুয়ারা আবার পুজোর জন্য কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন, অভিযোগ তখন তাঁদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে জানানো হয়। এরপরে পড়ুয়ারা ক্যাম্পাসের গেটের ঠিক বাইরেই পুজোর আয়োজন করেন। গত বছরও তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ক্যাম্পাসে পুজো করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের করতে দেওয়া হয়নি। এবার অবশ্য ‘সাধারণ ছাত্রছাত্রী’–দের নামেই পুজোর আবেদন করা হয়েছিল।

    এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন অনেকে। প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী, গবেষক এবং বর্তমানে জেনারেল ডিগ্রি কলেজ লালগড়ের শিক্ষক সন্দীপন মিত্র ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘ক্যাম্পাসের ভিতরে পুজো করা যাবে না, এটা কি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে লেখা আছে নাকি গভর্নিং বডির মিটিংয়ে ঠিক হয়েছে?’

    প্রতিষ্ঠানের কেমিস্ট্রির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক গান্ধীকুমার কর সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘আইআইটি, খড়্গপুর, কানপুর, আইআইএসসি বেঙ্গালুরু সর্বত্র ক্যাম্পাসের ভিতরে এমনকী ডিপার্টমেন্টের মধ্যেই সরস্বতী পুজো হয়েছে। কোথাও সেকুলারিজ়ম নষ্ট হয়নি। শুধু প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটিই সেকুলারিজ়মের দোহাই দিয়ে পুজোটা বন্ধ করেছে।’

    এ ব্যাপারে ফোন এবং মেসেজ করেও উত্তর পাওয়া যায়নি উপাচার্য নির্মাল্যনারায়ণ চক্রবর্তীর। তৃণমূল অধ্যাপক সংগঠনের প্রেসিডেন্সির সভানেত্রী অন্তরা রায়ের বক্তব্য, ‘এই পুজোগুলো এখন ধর্মীয় থেকেও বেশি উৎসব–কেন্দ্রীক। কর্তৃপক্ষ কোন যুক্তিতে অনুমতি দিলেন না সেটা আমার জানা নেই।’

    এসএফআই নেতা বিতান ইসলাম বলেন, ‘ক্যাম্পাসে ধর্মীয় বিভাজনের উদ্দেশ্যে তৃণমূ‍ল এবং এবিভিপি মিলে এই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করে। কিন্তু ক্যাম্পাসে পুজো না হলেও হিন্দু হস্টেলের পুজোতেই আমরা সকলে মজা করেছি। ওটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পুজো।’

    প্রাক্তনীরা জানাচ্ছেন, সরাসরি পড়ুয়ারা প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজোর আয়োজন না করলেও ২০১৮–১৯ সাল পর্যন্ত মূলত কর্মীদের উদ্যোগে ক্যাম্পাসের মধ্যেই পোর্টিকোতে পুজো হয়েছে।

  • Link to this news (এই সময়)