• সিঁদুরকাণ্ড: ‘মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত, কাজ করা সম্ভব নয়’! ইস্তফাপত্র পাঠালেন সেই অধ্যাপিকা
    আনন্দবাজার | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ক্লাসরুমে সিঁদুরদান এবং মালাবদলের ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ায় সম্মানহানি হচ্ছে। ওই ভিডিয়ো না ছড়ানোর আবেদন জানিয়েছিলেন নদিয়ার হরিণঘাটার মৌলানা আবুল কালাম আজ়াদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (ম্যাকাউট)-র মনস্তত্ত্ব বিভাগের সেই অধ্যাপিকা। এ বার ম্যাকাউটের রেজিস্ট্রারের কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে কলেজ ছাড়ার কথা জানালেন তিনি।

    গত শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ম্যাকাউটের রেজিস্ট্রার পার্থপ্রতিম লাহিড়ির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন মনস্তত্ত্ববিদ্যার সেই অধ্যাপিকা। তিনি জানান, মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। যে ভাবে ওই সিঁদুরকাণ্ডের ভিডিয়ো ছড়ানো হচ্ছে, তাতে আর কাজ করা সম্ভব নয়! অধ্যাপিকার ইস্তফাপত্র পেয়েছেন বলে জানান ম্যাকাউটের রেজিস্ট্রার। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়ম মেনে ওই ইস্তফাপত্র উপাচার্যের কাছে পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার একমাত্র উপাচার্যেরই আছে।’’

    গত ২৮ জানুয়ারি থেকে সমাজমাধ্যমে ওই অধ্যাপিকা এবং এক ছাত্রের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিয়োটিতে দেখা যায়, অধ্যাপিকার পরনে লাল বেনারসি। গলায় গোলাপ এবং রজনীগন্ধার মালা। তাঁর সিঁথিতে সিঁদুর রাঙিয়ে দিতে দেখা যায় এক কলেজ ছাত্রকে। ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। ক্লাসরুমে কী ভাবে এই আচরণ করলেন অধ্যাপিকা, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিতর্ক মাথাচাড়া দিতেই ম্যাকাউটের হরিণঘাটা ক্যাম্পাসের ‘অ্যাপ্লায়েড সাইকোলজি’ (ফলিত মনস্তত্ত্ববিদ্যা) বিভাগের প্রধান ওই অধ্যাপিকাকে ছুটিতে পাঠিয়ে দেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

    কী ঘটেছিল ক্লাসরুমে? কেন অধ্যাপিকা এমন কাণ্ড ঘটালেন? তা নিয়ে খতিয়ে দেখার জন্য ম্যাকাউট কর্তৃপক্ষ পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করেন। সম্প্রতি সেই কমিটি রিপোর্ট দেয়। তাতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়, শ্রেণিকক্ষে অধ্যাপিকা যে ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা কোনও কারিকুলাম বা পাঠক্রমের অংশ ছিল না। যদিও ওই অধ্যাপিকা দাবি করেন, কলেজের ‘ফ্রেশার্স’ অনুষ্ঠানের জন্য একটি নাটকের পরিকল্পনা করেছিলেন পড়ুয়ারা। বিয়ের দৃশ্যটি ওই নাটকেরই অংশ। কিন্তু ওই অংশটি ভিডিয়ো করে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে চক্রান্ত রয়েছে বলেই দাবি করেন অধ্যাপিকা। তাঁর অভিযোগ, এক সহকর্মী ইচ্ছাকৃত ভাবে সম্মানহানি করার জন্য ওই ভিডিয়ো ছড়িয়ে দিয়েছেন। পরে তিনি সমাজমাধ্যমে সকলের উদ্দেশে অনুরোধ করেন, ‘‘অসভ্যতাকে প্রশ্রয় দেবেন না। এ সব বন্ধ করুন। আমার পাশে দাঁড়ান। ভিডিয়োটি আপনারা রিপোর্ট করুন। আর শেয়ার করবেন না।’’ তবে তাতে কোনও ফল হয়নি। সেই কারণেই এ বার কলেজ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন সেই অধ্যাপিকা।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)