• ওবিসি শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত একটি মামলা খারিজ শীর্ষ আদালতে
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫


  • রাজ্যের ১২ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত একটি মামলা খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মসিহের বেঞ্চ নতুন মামলায় জানিয়েছে, ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল নিয়ে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে তাতে হস্তক্ষেপ করা হবে না। ওবিসি শংসাপত্র বাতিল সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে অনেক দিন ধরেই চলছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি নতুন মামলা দায়ের হয়। ওবিসি শংসাপত্রের বিষয়ে গত ৬ জানুয়ারি দায়ের হওয়া একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

    কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ৬ জানুয়ারি নতুন মামলা দায়ের করেন অবনী কুমার বিশ্বাস। এই মামলাটিতে মোট  তিনটি বিবাদী পক্ষ রয়েছে। রাজ্য সরকার, পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি কমিশন এবং অমল কুমার দাস। নতুন মামলাটিতে শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিয়েছে , হাইকোর্টের রায়ে হস্তক্ষেপ করা হবে না। তাঁর মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ। বেঞ্চ এও জানিয়েছে যে, যদি এই সংক্রান্ত কোনও আবেদন বিচারাধীন থাকে তবে তারও নিষ্পত্তি করা হল।

    এদি্কে ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে রাজ্যের আবেদনের মূল মামলার ভবিষ্যত নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে অনেকের মধ্যে। আইনজীবীদের একাংশের মতে, এই সংক্রান্ত অন্য আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফলে মূল মামলাটিও খারিজ হয়ে যেতে পারে। তা না-হলে ওই আবেদনটি মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দিত সুপ্রিম কোর্ট। যেমন এসএসসির ২৬ হাজার চাকরি বাতিল সংক্রান্ত মামলায় একাধিক আবেদন খারিজ না করে মূল মামলার সঙ্গে যুক্ত করেছে সুপ্রিম কোর্ট। 

    যদিও অন্য আইনজীবীদের মতে, যে আবেদনটি খারিজ হয়ে গিয়েছে তাতে বিবাদী পক্ষের কেউ উপস্থিত ছিলেন না। মূল মামলা যে খারিজ করা হয়েছে এমন কোনও নির্দেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট।  মূল মামলার শুনানি অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে। সব পক্ষের আইনজীবীরাও সওয়াল করছেন। ফলে মাঝখানে মামলা খারিজ এটি ধরে নেওয়া যায় না।

    গত বছর ২২ মে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের প্রায় ১২ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে দেয়। ওবিসি শংসাপত্র সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে মামলাটি করেছি্লেন অমল কুমার দাস। বলা হয়, ২০১০ সালের পর থেকে পদ্ধতি মেনে ওই সব সার্টিফিকেট তৈরি করা হয়নি। ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। পরে রায়কে চ্যালেঞ্জ করে পশ্চিমবঙ্গ অনগ্রসর শ্রেণি কমিশনও। ওই মামলায় তাঁর পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট। বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয় ১২ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র। সেই মামলার শুনানি শীর্ষ আদালতে চলছে। 

    হাইকোর্টে মূল মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তের মতে, নতুন মামলাটি খারিজ হওয়ায় মূল মামলায় প্রভাব পড়তে পারে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের আবেদন করা মূল মামলায় অবশ্যই একটি প্রভাব পড়বে। কারণ একই ধরনের একটি মামলা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারাধীন মামলাটিতেও তার প্রভাব পড়বে।” সুদীপ্ত জানান, একই নির্দেশের প্রেক্ষিতে একটি মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে। তখন মূল মামলাটিও খারিজ করার জন্য তাঁরা আদালতে আবেদন জানাবেন।

    ১৮ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি রয়েছে। সেটিরও শুনানি হচ্ছে বিচারপতি গাভাইয়ের বেঞ্চেই। এরই মধ্যে এ বিষয়ে নতুন করে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। তবে এই নতুন মামলাটি খারিজ হয়ে যাওয়ায় মূল মামলাটির উপর প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)