হোটেলের ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে নথি জাল করে ২৫০ গাড়ি চুরি, গ্রেফতার অসমের সঞ্জীব
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
একটা বা দুটি গাড়ি নয়, একেবারে ২৫০টি গাড়ি হাতিয়ে নম্বর জালিয়াতি করে বিক্রি করা হত মোটা দামে। আর সেই টাকা লাগাতো হোটেলের ফ্র্যাঞ্চাইজিতে। শুধু তাই নয়, হোটেলে আসা অতিথিদের জমা করা নথি জালিয়াতি করে অভিযুক্ত হাতিয়ে নেওয়া গাড়িকে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করত। আর এভাবেই রমরমিয়ে চলতো ব্যবসা। অবশেষে সেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের নাম সঞ্জীব সিং। কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় অসম পুলিশ রবিবার মহাত্মা গান্ধী রোড থেকে তাকে গ্রেফতার করে। সব মিলিয়ে ২৫০টি গাড়ি হাতিয়ে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে সঞ্জীবের বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, সম্প্রতি অসমের দিসপুর থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন পম্পা বর্মন নামে এক মহিলা। অভিযোগে, তিনি জানিয়েছিলেন যে তার দুটি গাড়ি সঞ্জীবকে ভাড়া দিয়েছিলেন। গাড়িগুলি জরুরি পরিষেবায় ব্যবহার করার কথা জানিয়েছিল সঞ্জীব। কিছু অগ্রিম টাকা সে মহিলাকে দিয়েছিল। কিন্তু, তারপরে নির্জন জায়গায় গাড়ির নম্বর প্লেট বদলে সেগুলি ভিন রাজ্যে গিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল। এদিকে, পম্পা বর্মন সঞ্জীবকে ফোন করলেও ফোনে পাচ্ছিলেন না। তারপরে মহিলা থানায় অভিযোগ জানান। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পারে সঞ্জীবের নামে এরকম একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানতে পারে, গুয়াহাটিতে একেবারে একটি ট্রাভেল এজেন্সি খুলে গাড়ি ভাড়া নিয়ে সেগুলি বিক্রি করে দিত সঞ্জীব। এর কিছুদিন পরেই সেই এজেন্সি বন্ধ করে দেয়। পরে অন্য এজেন্সির গাড়ি চুরি করার জন্য বিভিন্ন লোককে এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ করত সে। অভিযোগ রয়েছে, যারা সঞ্জীবকে গাড়ি দিয়েছিলেন তারা কেউই গাড়ি ফেরত পাননি। সব মিলিয়ে প্রায় ২৫০টি গাড়ি হাতিয়ে বিক্রি করে দিয়েছিল এই সঞ্জীব। গত পাঁচ বছর ধরে এই চক্র চালাচ্ছে সে।
তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে ডিমাপুরে চুরি করা গাড়ি নিয়ে যেত সঞ্জীব। এরপর সেখানে রং এবং নম্বর প্লেট বদলে ফেলত। নতুনভাবে গাড়িগুলির রেজিস্ট্রেশন করে সেগুলি বিক্রি করত। এর আগেও তাকে ধরার চেষ্টা করেছে পুলিশ। কিন্তু, প্রত্যেকবার সে পালাতে সক্ষম হয়েছিল। মাঝেমধ্যেই সে কলকাতায় এসে গা ঢাকা থাকত। সেখানে বেশ কয়েক মাস থাকার পর আবার নতুন অভিযানে নামত সঞ্জীব।
পুলিশ জানতে পেরেছে, সঞ্জীবের নতুন মোবাইল নাম্বার তাদের হাতে আসে। এরপর লোকেশন ট্র্যাক করে জানা যায় সে কলকাতার একটি হোটেলে রয়েছে। সেই মতোই দিসপুর থানার পুলিশ কলকাতায় পৌঁছয়। সেখানে কলকাতা পুলিশের সহায়তায় মহাত্মা গান্ধী রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। সঞ্জীবকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, নিউটাউনে একটি হোটেলের ফ্র্যানচাইজি নিয়েছিল। সেখানে আসা অতিথিদের আধার, ভোটার কার্ডের নথি জাল করে গাড়ির জাল রেজিস্ট্রেশন করত। আর পুরনো গাড়িকে নতুন বলে মোটা দামে বিক্রি করত।