• সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে উদ্ধার দুই শিশু, মা ছেড়ে চলে গিয়েছে, পুলিশ দিল খাবার
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সকাল হতেই দেখা গেল, সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে বসে দুই শিশু। কিছু যেন খুঁজছে। তাই যেখানে বসেছিল দুই শিশু সেখানের চারদিকে ইতঃস্তত ঘুরে বেড়াচ্ছিল। কিন্তু যেটা খুঁজছে সেটা পাচ্ছে না। এই এদিক–ওদিক দুই শিশুর ঘোরাফেরা প্রাতঃভ্রমণকারীদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে। তাই তাঁরা ওই শিশু দুটিকে জিজ্ঞাসা করেন, তারা এখানে কী করছে?‌ কাদের সঙ্গে এসেছে?‌ নাম কি?‌ খাবার খেয়েছে কিনা?‌ কিন্তু তেমন কোনও সন্তোষজনক উত্তর মিলছিল না। তাই থানায় খবর দেন প্রাতঃভ্রমণকারীরা। সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে থেকে দুটি শিশুকে উদ্ধার করে উত্তর থানার পুলিশ। আর তখনই জানা যায়, নাবালক দুই সন্তানকে ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছে মা বলে দাবি দুই শিশুর। এই কথা জানানোর সঙ্গে সঙ্গে কান্না শুরু অসহায় ভাইবোনের।

    পুলিশ ওই দুই শিশুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, সম্পর্কে তারা ভাইবোন। তবে কোথায় বাড়ি সেটা সঠিকভাবে বলতে না পারেনি। আর দুই শিশু যা বিবরণ দিয়েছে তাতে প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে তাদের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরে। তবে এটুকু জানাতে পেরেছে ওই শিশুরা যে, টালিগঞ্জ এলাকায় ভাড়া থাকে তারা। মায়ের সঙ্গে এখানে এসেছিল। রাতে দুই সন্তানকে সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে ফেলে রেখে মা চলে যায় বলে তারা পুলিশকে জানিয়েছে। খাবার কেনার নাম করে মা তাদের এখানে বসতে বলে চলে যায়। আর ফিরে আসেনি।


    এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। শিশুদের কথা শুনে বেশ কষ্ট পান পুলিশ অফিসাররা। তখন তাদের কিছু খেতে দেয়। তাই খেয়ে তারা একটু স্বস্তি বোধ করছে। রাতভর রাস্তার ধারেই বসেছিল এই দুই শিশু। কিছু খাবার জোটেনি। খুব খিদে পেয়েছিল বলে কান্নাকাটি করেছিল। শীতের রাতে কেউ সাহায্য করেনি। সকালে প্রাতঃভ্রমণকারীদের নজরে পড়ে তারা ঘোরাফেরা করছে। পুলিশ ওই শিশু দুটিকে উদ্ধার করে উত্তর থানায় নিয়ে এসেছে। শিশুদের পরিবারের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। আশপাশের থানায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে কোনও মিসিং ডায়েরি হয়েছে কিনা। একটি শিশুর বয়স ৬ এবং আর একজনের বয়স ৯।

    এছাড়া প্রাতঃভ্রমণকারীরা যখন খোঁজ করছিল তখন সেখানের একটি স্থানীয় চায়ের দোকানের মহিলা ওই শিশুদের আশ্রয় দেয়। চায়ের দোকানের মহিলাই আগলে রেখে ছিল শিশুদের। বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ এলে তাদের হাতে তুলে দেন ওই মহিলা। মায়ের এমন অমানবিক আচরণে স্তম্ভিত সবাই। ওই চায়ের দোকানের মহিলা জানান, ৯টার সময় ওদের মা বলল, বাচ্চাদের রেখে যাচ্ছি একটু দেখবেন। খাবার কিনে নিয়ে আসছি। রাত ১১টার সময়ও দেখি ওরা বসে আছে। ওদের রাত থেকে কিছু খাওয়াতে পারিনি। বাচ্চার মতো কাছে নিয়ে বুঝিয়েছি। তবে সিজিও কমপ্লেক্সের পাশেই চাইল্ড ওয়েলফেয়ারের অফিস রয়েছে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)