রাত পোহালেই শুরু হবে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন, নিউটাউন জুড়ে শুধু ধুনোর গন্ধ!
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
রাত পোহালেই শুরু হয়ে যাবে দু’দিনের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। কিন্তু তার প্রাক্কালে দেখা গেল, দেদার মশার উৎপাত। বিনিয়োগ করতে এসে যদি শিল্পপতিদের মশা কামড়ায় অথবা কানের পাশে ভিন ভিন করে তাহলে মান–সম্মান নিয়ে টানাটানি হবে। আর তাই এবার নিউটাউনে আগামী কদিন ধুনো ব্যবহার হবে মশার উপদ্রব ঠেকাতে। আগামীকাল, বুধবার থেকে নিউটাউনে শুরু হচ্ছে রাজ্য সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ‘বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট’। কিন্তু নিউটাউন, ইকো পার্ক–সহ ওই এলাকা এখন যথেষ্ট উন্নত। উন্নয়নের প্রমাণ রয়েছে ছত্রে ছত্রে। সেটা সামান্য এই মশার জন্য ভেস্তে যেতে দিতে পারে না রাজ্য সরকার। তাই ধুনোর সঙ্গে নারকেল ছোবড়া, নিমপাতা এবং কর্পূর মিশিয়ে ধোঁয়া দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে।
আগামীকাল বুধবার এবং বৃহস্পতিবার দু’দিন ধরে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন চলবে। সেখানে ভুটানের রাজা থেকে শুরু করে শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি হাজির থাকবেন। আরও বহু বিশিষ্ট শিল্পপতি, উদ্যোগপতিরা উপস্থিত হবেন। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইকো পার্কে রাতে থাকতে পারেন বলে সূত্রের খবর। এই অবস্থায় ইকো পার্ক, বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারের মতো জায়গাগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে নেমে পড়েছে বিপুল পরিমাণ সাফাই কর্মী। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে—‘নিট অ্যান্ড ক্লিন’ রাখতে হবে সবসময়।
এখানে ধুনোর গন্ধ ছড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাই ইকো পার্কের নানা জায়গায় বসানো হয়েছে স্ট্যান্ড। প্রত্যেকদিন বিকেলে ধুনো দেওয়া হবে। এখানে শিল্পপতিদের জন্য খাওয়া–দাওয়ারও বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ঝাঁ চকচকে কনভেনশন সেন্টারে মশার উপদ্রব বরদাস্ত করা হবে না। আর তাই রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে ধুনো ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সম্মতি দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই বিষয়ে এক অফিসার বলেন, ‘তেল পুড়িয়ে ফগিং মেশিনের ধোঁয়া দেওয়া নিষিদ্ধ। আর এই সম্মেলনে বহু বিশিষ্ট মানুষের জমায়েত হবে। তাই মশা তাড়াতে ভেষজ ধুনোর ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার বইমেলা প্রাঙ্গণে ধুনো দিয়ে মশা তাড়ানোর কাজে সাফল্য এসেছে। তাই বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনেও ধুনোর ব্যবহার করা হচ্ছে।’
এই নিউটাউন এলাকায় বসতি আছে। আছে খালপাড় এবং পঞ্চায়েত সংযোগকারী এলাকাগুলি থেকে জঞ্জাল এখানে ফেলে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ। অনেক সময় এখানে উদ্বৃত্ত খাবার কুড়িয়ে বায়োগ্যাস প্রকল্পে বিক্রি করার একটি চক্র কাজ করে। ফলে দূষণ হয় এখানে। যার জেরে ওই এলাকায় প্রচুর কাঁচা আবর্জনা পড়ে থাকে এবং তা থেকেই বাড়ে মশা–মাছির উপদ্রব। এই কারণে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সতর্কতা বাড়ানো হচ্ছে। কদিন ধরে এলাকায় ব্যাপক সাফাই অভিযান হচ্ছে। ভাঙাচোরা রাস্তা মেরামত হয়ে গিয়েছে। মশা মারতে তেল দেওয়ার কাজ চলছে। পুলিশকেও বাড়তি নজর রাখতে বলা হয়েছে। যাতে বহিরাগত কেউ নিউটাউনে আবর্জনা ফেলে যেতে না পারেন। এখানে রাত পর্যন্ত দেশ–বিদেশের অতিথিরা উপস্থিত থাকবেন। তাই সেখানে মশার উপদ্রব ঠেকাতে ধুনোর ব্যবহার–সহ নানা উপায়ে মশা তাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে নিউটাউনে।