খুশিতে মাতোয়ারা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাস। চিরাচরিত প্রথা মেনেই সরস্বতী পুজোর পরের দিন মঙ্গলবার ‘তত্ত্ব উৎসব’ পালিত হয়েছে। বসন্তের শুরুতে কেউ করল প্রেম নিবেদন আবার কেউ বাড়াল বন্ধুত্বের হাত।
জানা গিয়েছে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১২টি হস্টেল। এ বছরেও ছাত্রছাত্রীরা এক পক্ষ অন্য পক্ষের হস্টেলে ফল, মিষ্টি, চিপস, চকোলেটে ভরা ‘তত্ত্বে’-র ডালি পৌঁছে দিয়েছেন। এ দিন তত্ত্ব বিনিময়ের সময়ে ক্রমাগত বেজে চলল শঙ্খ ও ঢাক। এমনকী এই অনুষ্ঠান দেখতে রাস্তার দু’ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্থানীয়রা।
সরস্বতী পুজো যা অনেকের মতে বাঙালির ভ্যালেন্টাইন্স ডে, তার পরের দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে এবং মেয়েদের হস্টেলের মধ্যে ‘তত্ত্ব’ আদানপ্রদান হয়ে থাকে। ঐতিহ্যবাহী এই রীতির হাত ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল প্রাঙ্গণগুলিতে একটি মন ছুঁয়ে যায় আর একটি মনকে। সারা বছরের মধ্যে কেবল এই দিনটাতেই ছাত্ররা মেয়েদের হস্টেলে আর ছাত্রীরা ছেলেদের হস্টেলে অবাধে প্রবেশ করতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী জানিয়েছেন, এই রীতি শুরু হওয়ার স্পষ্ট কারণ কী তা ঠিক করে কেউ বলতে পারে না। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বন্ধুত্বের সুসম্পর্ক আরও নিবিড় হয়। এ দিন প্রেম নিবেদনের ‘সুবর্ণ’ সুযোগ অনেকেই হাতছাড়া করতে চায় না।
তত্ত্বে কী থাকে?
ফল, মিষ্টি, চকোলেট, নানান মুখরোচক খাবার-সহ বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে সাজানো হয় ডালা। এ দিন বিভিন্ন হস্টেলের মধ্যে অঘোষিত প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে তত্ত্ব সাজানো আর আলপনা আঁকা নিয়ে।
তবে ‘তত্ত্ব’ বলতে সাধারণ বাঙালি যা বোঝে এই ক্ষেত্রে তার সঙ্গে কোনও মিল নেই। জনশ্রুতি আছে এই উৎসবকে কেন্দ্র করে দৃঢ় হয় বন্ধুত্ব, প্রেম ও ভালোবাসা। কখনও কখনও ভালোবাসার দু’জন মানুষকে কেন্দ্র করেই বসে কাল্পনিক বিবাহ আসর, গানের আসর।