রেলপথ সম্প্রসারণের জায়গা প্রয়োজন। কিন্তু তাদের উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাটে। আগাম নোটিস জারি করে মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশবাহিনী নিয়ে কোলাঘাটে দোকান উচ্ছেদ শুরু করে রেল। কিছু ক্ষণের মধ্যেই আসে বাধা। পুনর্বাসন ছাড়া দোকানে হাত দেওয়া যাবে না, এই দাবিতে রুখে দাঁড়ান ব্যবসায়ীরা। উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করতে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়ান তাঁরা। তাতে বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে ব্যবসায়ীদের বাধায় শেষ পর্যন্ত দোকান ভাঙার কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে গিয়েছেন রেলের আধিকারিকেরা। অন্য দিকে, কোলাঘাট স্টেশন রোড এবং শরৎ সেতু এরিয়া বাজার কমিটির হুঁশিয়ারি, পুনর্বাসন ছাড়া কোনও ভাবেই উচ্ছেদ অভিযান করতে দেবে না তারা। গায়ের জোরে ভাঙচুর করতে এলে সংগঠিত ভাবে আন্দোলন হবে।
রূপনারায়ণ নদের উপর কোলাঘাটের আপ এবং ডাউন রেলের দুটি ব্রিজ়েই কয়েক মাস আগে ফাটল দেখা দেয়। তার ফলে কোলাঘাট স্টেশনের ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝের ফাঁকা অংশ দিয়ে আরও দুটো প্ল্যাটফর্ম নির্মাণের পরিকল্পনা করে হাওড়া-খড়্গপুর দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে। নদে দু’টি রেল ব্রিজ় নির্মাণেরও পরিকল্পনা হয়েছে। এই কাজের জন্য রেলের জায়গা দখল করে তৈরি হওয়া অনেক দোকান ভাঙার সিদ্ধান্ত হয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও ওই সিদ্ধান্ত মেনেও নেন। কিন্তু তাঁদের দাবি, আশপাশে থাকা রেলের পরিত্যক্ত জায়গায় পুনর্বাসন দিতে হবে। তাতে এখনও রেলের ‘সবুজসঙ্কেত’ পাননি তাঁরা। বাজার কমিটির সভাপতি ফণিভূষণ মাজি বলেন,“বর্তমানে কোলাঘাটের ২ এবং ৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝের ফাঁকা অংশে থাকা প্রায় ৭০টি দোকান ভাঙার প্রস্তুতি নিয়েছে রেল। তাদের পুনর্বাসনের দাবিতে আন্দোলন করছে কোলাঘাট স্টেশন রোড এবং শরৎ সেতু এরিয়া বাজার কমিটি।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, গত ২০ জানুয়ারি রেলের আধিকারিকেরা এলাকা পরিদর্শন করে রেলের পরিত্যক্ত জায়গায় পুনর্বাসনের কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেই কাজ না-করেই ভাঙচুর শুরু করে দিয়েছে রেল। তাই বাধা আসবেই।
মঙ্গলবার পুলিশবাহিনী নিয়ে ৭০টি দোকান ভাঙার কাজে হাত দেন রেলের আধিকারিকেরা। সঙ্গে সঙ্গে বাধা দেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। জানা যাচ্ছে, প্রায় ১৪টি দোকানঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে। তার মধ্যেই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি সামলাতে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে এখনকার মতো উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রেখে চলে যান আধিকারিকেরা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দক্ষিন-পূর্ব রেলওয়ের দোকানদার কল্যান সমিতির সহ-সভাপতি শঙ্কর মালাকার, মধুসূদন বেরা প্রমুখ জানাচ্ছেন, উচ্ছেদ হওয়া দোকানদারদের পুনর্বাসনের জটিলতা না-কাটলে কোনও ভাবেই আর একটি দোকানেও হাত দিতে দেবেন না তাঁরা। এ নিয়ে রেলের বক্তব্য মেলেনি।