• বিজিবিএস শুরু আজ, থাকছেন আম্বানি-জিন্দলরাও
    এই সময় | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • এই সময়: মুকেশ আম্বানি থেকে সজ্জন জিন্দল, ৪০টি দেশের প্রতিনিধি, পড়শি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে আজ, বুধবার শুরু হচ্ছে এ বারের বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট (বিজিবিএস)। আসার কথা পড়শি দেশ ভুটানের প্রধানমন্ত্রীরও। লোকসভা ভোটের কারণে গত বছর বসেনি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন।

    ইতিমধ্যেই বিজিবিএসের আগে সেমিকন্ডাক্টর ক্ষেত্রে বিপুল লগ্নির নিশ্চয়তা এসেছে রাজ্যে। সূত্রের খবর, এ বার দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন শিল্প সংস্থা থেকে বিপুল অঙ্কের লগ্নি আসার সম্ভাবনা রয়েছে। শিল্প সম্মেলন উপলক্ষ্যে সেজে উঠেছে নিউটাউন থেকে শুরু করে পুরো কলকাতা।

    মঙ্গলবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২২টি দেশের রাষ্ট্রদূতেরা শহরে পৌঁছে গিয়েছেন। ২০০ জন বিদেশি অতিথিরও আসার কথা রয়েছে। এদিকে, মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রাজ্য আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) নিয়ে পৃথক নীতি তৈরি করবে।

    মঙ্গলবার সন্ধ্যায় চা চক্রের মাধ্যমে এ বারের শিল্প সম্মেলনের বোধন হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে নিউটাউনে সেই চা চক্রে যোগ দিয়েছিলেন দেশ বিদেশের অতিথিরা। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে মমতা বলেন, ‘২২ জন অ্যাম্বাসাডর এসে গিয়েছেন। এ বার প্রায় ৪০টি দেশ আসছে। তার মধ্যে ২০টি পার্টনার কান্ট্রি। ৪০টি দেশের প্রায় ২০০ বিদেশি অতিথি সম্মেলনে যোগ দেবেন। এটা ইউনিক টাইপ অফ প্রোগ্রাম।’ শিল্পপতিদের মধ্যে কারা আসছেন? মমতা বলেন, ‘মুকেশ আম্বানি, সজ্জন জিন্দাল আসছেন। এখানকার শিল্পপতিরা সকলেই বরাবরের মতো থাকবেন। তা ছাড়াও অনেকে আসবেন।’

    ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর আসার কথা দীর্ঘদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। তিনি কি আসছেন? মমতার জবাব, ‘ভুটানের প্রধানমন্ত্রী অক্টোবরে আমাকে কনফার্ম করেছেন। আমার কাছে এখনও পর্যন্ত খবর যে, কাল সকালে তিনি আসবেন। তবে কিছু খবর আসছে যে, দিল্লির সঙ্গে কিছু হচ্ছে। আমি জানি না। কিন্তু চাই, উনি আসুন। বাংলার সঙ্গে ওদের সীমান্ত রয়েছে। পড়শি দেশগুলির সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্কের উন্নতি হলে তা দেশের পক্ষে তো ভালোই।’ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফর কি আটকানোর চেষ্টা করছে দিল্লি? মমতার জবাব, ‘আমি এখন কিছু বলব না। কারণ, আমার জানা নেই। যতক্ষণ পর্যন্ত না তেমন খবর আসছে, ততক্ষণ আমি কিছু বলতে পারব না।’

    চলতি বছরের বিজিবিএসের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। উল্লেখ্য, দু’মাস আগে মমতার সময়ের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে নিজের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের সময় সকালের বদলে পিছিয়ে বিকেলে করেছিলেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার প্রধান হেমন্ত। সেই হেমন্তকেই বিজিবিএসের প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির করে সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপিকে বিশেষ বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বাংলায় আগামী বছর বিধানসভা ভোট। তার আগে এই শিল্প সম্মেলন মমতার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

    সিআইআই ও ফিকির এবারের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকও চলছে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে। সেখানেই বসছে বিজিবিএসের আসর। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের আগে মুখ্যমন্ত্রী এই বণিকসভার সঙ্গেও সামান্য সময় বৈঠক করবেন। সূত্রের খবর, ওই কর্মসমিতির বৈঠকে যোগ দেবেন দেশের ৩০ জন বড় শিল্পপতি। থাকতে পারেন সিআইআই-এর সর্বভারতীয় সভাপতি তথা আইটিসি-র চেয়ারম্যান সঞ্জীব পুরী। বাণিজ্য সম্মেলন উপলক্ষে সেজে উঠেছে মহানগরী। হোর্ডিং, ব্যানার-সহ পরিকাঠামোগত ব্যবস্থাপনা নখদর্পণে রাখছে প্রশাসন। সম্মেলন থেকে এআই হাব নিয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে। সেমিকন্ডাক্টর, বস্ত্র-চর্ম শিল্প, পর্যটন, ভারী শিল্পে লগ্নি টানায় জোর দেওয়া হচ্ছে।

    বৃহস্পতিবার শিল্পের প্রত্যেকটি ক্ষেত্র ধরে ধরে আলোচনা হবে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারের একাধিক হলে। কৃষি, প্রাণি-সম্পদ উন্নয়ন, তথ্য-প্রযুক্তি, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মৎস্য, বিদ্যুৎ, বিনোদন ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা হবে। বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারের পাশাপাশি বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণেও থাকছে বাংলার হস্তশিল্প নিয়ে মেলা ও প্রদর্শনী।

  • Link to this news (এই সময়)