এই সময়: বানতলা চর্মনগরীর নিকাশিনালা পরিষ্কার করতে গিয়ে ম্যানহোলে নেমে তিন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় প্রবল ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী। গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে। পাশাপাশি, কলকতার মেয়র ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও বিশেষ নজরদারির নির্দেশ দেন।
রবিবার কলকাতা লেদার কমপ্লেক্সের ভিতরে সেক্টর ৬ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অধীনে সাফাইয়ের কাজ চলছিল। ট্যানারির বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্যে প্রথমে এক সাফাইকর্মীকে নামানো হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে ডেভেলপমেন্ট অথরিটির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। ওই অথরিটির সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মন্ত্রী জাভেদ খান। মন্ত্রিসভার বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়ন জাভেদ। মুখ্যমন্ত্রী বলে দেন, ‘এ সব হলে আমি তোমাদের অ্যাসোসিয়েশন ভেঙে দেব।’
ওই ম্যানহোলটির গভীরতা প্রায় দশ ফুট। বিভিন্ন রাসায়নিকের তীব্র দুর্গন্ধ ও বিষাক্ত গ্যাস ছিল বলে আশঙ্কা। তারই জেরে তিন সাফাইকর্মীর মৃত্যু হয়। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট ম্যানহোল বা নিকাশিনালায় মানুষ নামিয়ে পরিষ্কার করা ২০১৩ সালেই নিষিদ্ধ করেছে। ম্যানহোল সাফাই, মলমূত্র সাফাইয়ের মতো কাজ কোনও মানুষকে দিয়ে করানো যাবে না। কোনও বিশেষ পরিস্থিতিতে কাউকে ম্যানহোলে নামাতে হলে সংশ্লিষ্ট সাফাইকর্মীর জীবন এবং স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় সব রকম ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল।
কাউকে ম্যানহোলে নামাতে হলে নিশ্চিত হতে হবে যে সেখানে প্রাণঘাতী গ্যাস নেই। সংশ্লিষ্ট কর্মীকে নামানোর আগে মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিশেষ অ্যাপ্রনও পরাতে হবে। এ সব কিছুই বানতলা চর্মনগরীর ম্যানহোলে শ্রমিক নামানোর সময়ে মানা হয়নি বলে অভিযোগ। ২০২৩–এর নির্দেশে আবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ম্যানহোলে নেমে কোনও শ্রমিকের মৃত্যু হলে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাবেন পরিজন। পরিবারের পুনর্বাসনেরও দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকে।