সৈদাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রাচীনত্ত্ব নিয়ে নানা প্রমাণ পেশ
বর্তমান | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
তাপস ঘোষ, বহরমপুর: সৈদাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠের প্রাচিনতা নিয়ে বারবার বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে। তাতে চরম অস্বস্তিতে পড়ছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। বিতর্কে জল ঢালতে জন্ম বৃত্তান্তের শিকড় সন্ধানে নেমেছিলেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মানসকুমার খাঁ(রায়চৌধুরী)। বিদ্যালয়ের ১৮০তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার ‘সৈদাবাদ হার্ডিঞ্জ স্কুল থেকে সৈদাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠে উত্তোরণ’ শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সেমিনার হলে বিদ্যালয়ের প্রাচীনত্ত্বের উপর গুণীজনের সামনে একাধিক প্রামাণ্য তথ্য উপস্থাপন করেন মানসবাবু।
বিদ্যালয়ের ১৭৫তম বর্ষপূর্তি থেকে নানা মহল বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাল নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিল। মানসবাবুর দাবি, তারপরই তিনি কার্যত আদাজল খেয়ে বিদ্যালয়ের শিকড় খুঁজতে শুরু করেন। পুরাতন আলমারি থেকে একটি পিতলের সিল মাটিতে পড়ে। তুলে দেখে তাজ্জ্বব হন মানসবাবু। সৈদাবাদ হার্ডিঞ্জ মিডিল ভার্নাকুলার বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা সাল ১৮৪৬। দ্বিগুণ উৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। এক এক করে হাতে আসতে শুরু করে নানা তথ্যপ্রমাণ। ১৯০৬ সালে এই বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে হয় মিডিল ইংলিশ স্কুল। ১৯১৪ সালে হয় হাই ইংলিশ স্কুল। ১৯১৭ সাল পর্যন্ত বর্তমান শ্রীচন্দ্র বিদ্যালয়ে চলত এই স্কুল। ১৯১৮ সালে বিদ্যালয় উঠে আসে কাশিমবাজার রাজবাড়ির ম্যানেজার ক্ষেত্রনাথ পালের বাড়িতে। ১৯১৯ সালে ফের স্থান পরিবর্তন হয়। এবার রেশম ব্যবসায়ী মুকুন্দবাবুর বাড়িতে উঠে আসে স্কুল। ১৯২৫ সালে কুঞ্জঘাটা রাজবাড়ি। ১৯২৫ সালে বর্তমান জায়গায় শুরু হয় সৈদাবাদ মণীন্দ্রচন্দ্র বিদ্যাপীঠ। তখন থেকে একই জায়গায় মাথা উঁচু করে রয়েছে।
১৯২২ সালে এই স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় প্রেসিডেন্সি বিভাগে প্রথম হন গৌরকুমার মণ্ডল। ১৯৩৭ সালে প্রেসিডেন্সি বিভাগে ইংরেজিতে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে রায়বাহাদুর রাধিকামোহন মুখোপাধ্যায় নামাঙ্কিত স্বর্ণপদক পান প্রভাত মৈত্র। মানসবাবু বলেন, স্কুলের ইতিহাস সামনে আনা আমার লক্ষ্য ছিল। সেটাই করেছি। আশা করি এরপর আর কোনও বিতর্ক থাকবে না। বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শ্যামানাথ সেনগুপ্ত বলেন, এমন একটি ঐতিহাসিক স্কুলে শিক্ষকতা করার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত।