• মধ্যরাতে রহস্যজনক ‘কম্পন’ গঙ্গার দু’পাড়ে,  সরকারি খাতায় তথ্যই নেই!
    বর্তমান | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাত জেগে নেটপাড়ায় আড্ডা দেওয়ার অভ্যাস এখন কমবেশি সকলের। সোমবার রাত দু’টো নাগাদ নেটপাড়া হঠাৎ কেঁপে উঠল। তবে কোনও বিতর্কে নয়, নেটিজেনদের দাবি-‘বাস্তবিকই কেঁপে উঠেছে খাট-চেয়ার-সোফা।’ তারপর নেটপাড়াজুড়ে রব, ‘ভূমিকম্প’ হলো নাকি! কিন্তু মঙ্গলবার সকালে জানা গিয়েছে, সরকারি খাতায় ভূকম্পনের কোনও তথ্য নেই। সাধারণ মানুষ সে কথা মানতে নারাজ। সবারই বক্তব্য, ‘যা রটে তার কিছু তো ঘটে!’ ভূমিকম্প হয়নি বলছে। তাহলে রহস্যজনক কিছু একটা হয়েছে নিশ্চয়। 


    বারাকপুর থেকে একটি যুদ্ধবিমান রওনা দিয়েছিল। সেটির যাত্রাপথের নীচে থাকা বাড়িগুলি কেঁপে উঠেছিল বিমানটির গতিজাড্যজনিত তরঙ্গে। পরে জানা গিয়েছিল এ তথ্য। এছাড়া পূর্ব মেদেনিপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল এলাকায় প্রশিক্ষণরত যুদ্ধ বিমান থেকে গোলা ছোড়ার মহড়া চলছিল। তাতে উপকূল সংলগ্ন বহু বাড়ি উঠেছিল কেঁপে। এছাড়াও ২০২০ সালের ৯ জানুয়ারি নৈহাটির লোহাঘাটে বাজেয়াপ্ত হওয়া বাজি নষ্ট করার সময় বারুদের বিষ্ফোরণে গঙ্গার অন্যপাড়ের চুঁচুড়ার অনেক বাড়ির কাচ ভেঙে গিয়েছিল। এই তিন ক্ষেত্রে মানুষ প্রথমে মনে করেছিলেন ভূমিকম্প হয়েছে। পরে আসল কারণ প্রকাশ্যে আসে। সোমবারের মাঝরাতের ঘটনার প্রকৃত তথ্যও সম্ভবত পরে জানা যাবে বলে মনে করে নেটপাড়া।


    সোমবার মাঝ রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর লেখা, ‘ভূমিকম্প হলো?’ ‘খাট ও জানালার কাচ যেন নড়ে উঠল।’ ইত্যাদি, ইত্যাদি। বিষয়টি এক-দু’জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। কেউ কিছু আতঙ্কের কথা লিখছেন আর প্রচুর মানুষ মন্তব্য করছেন। ‘সত্যিই মনে হলো ভূমিকম্প হয়েছে’, ‘হ্যাঁ! কেমন যেন নড়ে উঠল।’ মূলত হাওড়া-হুগলি-উত্তর ২৪ পরগনা-এই তিন জেলা থেকেই এমন মন্তব্য বেশি এসেছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজির তথ্য অবশ্য বলছে, ‘এই বাংলায় এক ফেব্রুয়ারি শেষ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল কোচবিহারে।’ তবে তার বিপরীতে গিয়ে বেসরকারি একটি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার ভূমিকম্প হয়েছে। ভাটপাড়ার আশপাশ হল উত্সস্থল। এর পাশাপাশি হাওড়া, শ্যামনগর, দমদম, নৈহাটি, খড়দা, কামারহাটি, ভাটপাড়া থেকে কম্পনের খবর জানিয়েছেন সেখানকার নাগরিকরা। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা হবিবুর রহমান বিশ্বাস যদিও বলেন, ‘ওই এলাকায় ভূমিকম্পের কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই।’ শুভজিত্ চট্টোপাধ্যায় নামে হাওড়ার সাঁতরাগাছির এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘বিছানায় শুয়ে ঝাঁকুনি অনুভব করলাম। তারপর দেখি, সমাজমাধ্যমে বন্ধুবান্ধবরা ভূমিকম্প হয়েছে বলে লেখালেখি করছে।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)