• চীন-বাংলাদেশের নাকের ডগায় সেনাবাহিনীর লাইভ ফায়ার মহড়া, প্রদর্শিত পিনাকা রকেট-সহ বিভিন্ন ক্ষেপনাত্রের বিধ্বংসী ক্ষমতা...
    আজকাল | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  •  

    আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় সেনাবাহিনীর 'ত্রিশক্তি কোর' এর একটি 'লাইভ ফায়ার' মহড়া অনুষ্ঠিত হল। চীন সিমান্তের কাছে অনুষ্ঠিত এই মহড়ায় সিকিমের পর্বত্য অঞ্চলে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও আধুনিক অস্ত্র ব্যবহারের কৌশল সফলভাবে প্রদর্শিত হয়েছে। মহড়ার মূল লক্ষ্য ছিল সেনাবাহিনীর যুদ্ধ-প্রস্তুতি, দ্রুত সেনা মোতায়েন এবং বাহিনীর প্রতিপক্ষকে নির্ভুল আক্রমণের ক্ষমতাকে পরীক্ষা করে দেখা।

    এই মহড়ায় বিভিন্ন ধরণের গাইডেড ও বিভিন্ন রকেট, মিসাইল নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছোড়া হয়। যার মধ্যে 'পিনাকা মাল্টি-ব্যারেল রকেট লঞ্চ সিস্টেম'ও ছিল। এই ক্ষেপনাত্রগুলি সঠিক লক্ষ্যভেদ করতে সক্ষম হয়। দেশে প্রস্তুত পিনাকা রকেট তার বিধ্বংসী লক্ষ্যভেদের ক্ষমতার জন্য প্রসিদ্ধ। ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)’র তৈরি এই রকেট টাট্রা ট্রাক বা অন্যান্য ভারী যানবাহনের ওপর মাউন্ট করা হয়। ফলে সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব। রকেট উৎক্ষেপণের পর সেই জায়গা থেকে দ্রুত সরে যাওয়া যায়। প্রতিটি লঞ্চার ১২টি রকেট বহন ও নিক্ষেপ করতে সক্ষম। মাত্র ৪৪সেকেন্ডে সব কটি রকেট নিক্ষেপ করা যায়। পিনাকা মার্ক I প্রায় ৪০ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুল আঘাত করতে পারে। মার্ক II প্রায় ৬০-৭৫কিমি এবং এরই উন্নত সংস্করণ মার্ক III প্রায় ৯০ কিমি দূরে আঘাত করতে সক্ষম। 

    সেনাবাহিনীর গৌহাটির পাবলিক রিলেশান অফিসার এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিকিমের কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং পার্বত্য ভূখণ্ডে অনুষ্ঠিত এই মহড়ায় সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট অংশ নেয়। তারা সমন্বিত ভাবে বিভিন্ন ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে নির্ভুল হামলার মাধ্যমে নিজেদের যুদ্ধ-কৌশল এই মহড়ায় প্রদর্শন করে। এই মহড়ার মাধ্যমে সেনাবাহিনী প্রমাণ করেছে যে তারা যে কোনো প্রতিকূল পরিবেশে নিজেদের অভিযোজন করতে সক্ষম এবং বহুমুখী অপারেশন পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুত।

    সিকিমের পার্বত্য এলাকা, চীন সিমান্ত, চিকেন নেকে অবস্থিত তরাই-ডুয়ার্স সহ উত্তরবঙ্গের বাংলাদেশ সীনান্তের নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা ত্রিশক্তি কর্পস-এর হেডকোয়ার্টার শিলিগুড়ি সংলগ্ন সুকনাতে অবস্থিত। বিশ্বের অন্যতম চ্যালেঞ্জিং যুদ্ধক্ষেত্রগুলির মধ্যে একটি হল সিকিমের উচ্চ পার্বত্য অঞ্চল। এই অঞ্চলে যুদ্ধের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি ও কৌশলগত প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। ত্রিশক্তি কর্পসের এই মহড়া সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণ এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়ার সক্ষমতাকে আরও সুসংহত করবে। এরই সঙ্গে যে কোনও রকম পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিলিগুড়ি করিডোর তথা 'চিকেন নেক' এর সুরক্ষা নিশ্চিত করা, ভারতের অখন্ডতা বজায় রাখা এবং দেশবাসীর নিরাপত্তাকে সুনিশ্চিত করতেই নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে এই ধরণের মহড়ার আয়োজন করা হয় বলে জানা গিয়েছে।
  • Link to this news (আজকাল)