• শ্মশানের দখল নিয়ে সংঘর্ষ, বোমাবাজি! বাঁকুড়ায় গুরুতর জখম তৃণমূল নেতা
    আনন্দবাজার | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • শ্মশানের জায়গার দখলদারি নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তেজনা বাঁকুড়ার পাত্রসায়র ব্লকের কাটোরা এলাকায়। মারামারি, বোমাবাজিতে কয়েক জন আহত হয়েছেন। গুরুতর জখম হলেন স্থানীয় তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে গিয়েছে পুলিশ। অন্য দিকে, জখম শাসকনেতাকে প্রথমে খন্ডঘোষ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁর আঘাত গুরুতর বলে পরে বর্ধমান মেডিক্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিোগ, ওই তৃনমূল নেতার মদতে এলাকায় বোমাবাজি হয়েছে। মারামারিতে জড়িয়েছে দুই পক্ষ।

    বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের কাটোরা এবং লালবাঁধ গ্রামের মাঝামাঝি একটি শ্মশান রয়েছে। দুই গ্রামের কোনও বাসিন্দার মৃত্যু হলে ওই শ্মশানেই দাহ করা হয়। সম্প্রতি নাকি শ্মশানটি তাঁদের বলে দাবি করেন লালবাঁধের বাসিন্দাদের একাংশ। কাটারো গ্রামের বাসিন্দারাও শ্মশানের ‘দখল’ নিতে যান। শুরু হয় দুই পক্ষের গন্ডগোল। তবে কাটোরা গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বেলুট রসুলপুর এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি তাপস বারি সেখানে হস্তক্ষেপ করেন। তাঁর নেতৃত্বে মঙ্গলবার কাটোরা গ্রামে হামলা হয়। মারধর করা হয় কাটোরার একাধিক গ্রামবাসীকে। তাপসের নেতৃত্বে লালবাঁধ গ্রামের কয়েক জন গায়ের জোরে শ্মশানের জমি দখল করতে যান। বাধা দেন কাটোরার বাসিন্দারা। তখন বোমাবাজি শুরু হয় এলাকায়।

    তৃণমূলের তাপসের অবশ্য দাবি, দুই গ্রামের মাঝে ২৫ জন চাষির ১৭ বিঘা জমি রয়েছে ওই শ্মশান এবং শ্মশানের আশপাশে। জমিতে কৃষকেরা চাষ করতে গিয়েছিলেন। তখন কাটোরা গ্রামের লোকজন বাধা দেন। এ নিয়ে তাঁর কাছে দরবার করেন লালবাঁধের বাসিন্দারা। তিনি শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধানের জন্য এলাকায় গেলে ১০-১২ জন তাঁর উপর রড, লাঠি, টাঙি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাঁরা প্রত্যেকে কাটোরার বাসিন্দা বলে অভিযোগ তৃণমূল নেতার। তিনি এ-ও অভিযোগ করেন, আক্রমণকারীদের কারও কারও হাতে আগ্নেয়াস্ত্র পর্যন্ত ছিল।

    তৃণমূল নেতার অভিযোগ উড়িয়ে কাটোরা গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ বাগদী বলেন, ‘‘শ্মশানের জায়গাটি দলিলে গোচর এবং শ্মশান হিসাবে উল্লেখ রয়েছে। আদালত তাতে সিলমোহর দিয়েছে। কিন্তু তাপস বারি লালবাঁধের কিছু মানুষকে নিয়ে ওই জায়গা দখল করতে আসেন। আপত্তি করায় মঙ্গলবার আমাদের মারধর করেন উনি। বোমাবাজিও হয়।’’ ওই গ্রামের আর এক বাসিন্দা গায়েত্রী বাগদী বলেন,‘‘আমরা মাঠে চাষের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। সেই সময় তাপস বারি লালবাঁধ গ্রামের কয়েক জনকে নিয়ে বোমাবাজি করতে করতে জায়গা দখল করার চেষ্টা করেন। ভয়ে পেয়ে আমরা কাজ ফেলে বাড়ি চলে আসি। তাপসকে মারধরের কোনও প্রশ্নই নেই।’’

    ওই গন্ডগোল নিয়ে বেলুট রসুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ফারুক মিদ্যা বকুল জানান, মঙ্গলবারই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের নিয়ে মিটিং হয়েছিল। মীমাংসা হয়। তার পরেও বুধবার গন্ডগোল হচ্ছে বলে খবর পেয়ে অঞ্চল সভাপতি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনিও আক্রান্ত হন। তাঁর হাত-পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বকুল।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)