• পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের প্রাপ্য আটকে  ৪০ পুরসভারকে বঞ্চনা মোদি সরকারের
    বর্তমান | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • সঞ্জয় গঙ্গোপাধ্যায়, বারাকপুর: বাংলাকে বছরের পর বছর পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের নগরোন্নয়ন খাতের টাকা থেকে বঞ্চিত রেখেছে মোদি সরকার। ন্যায্য প্রাপ্য আদায় করতে কেন্দ্রের উপর লাগাতার চাপ বাড়িয়ে গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই চাপে কিছুটা নতি স্বীকার করলেও রাজ্যের ৪০টি পুরসভার বরাদ্দের ক্ষেত্রে ‘বঞ্চনার ধারাবাহিকতা’ বজায় রাখল নয়াদিল্লি। সান্ত্বনা পুরস্কারের মতো করে  প্রায় দু’বছর আগের পাওনা থেকে যৎসামান্য দিয়েছে তারা। কিন্তু নগরোন্নয়ন মন্ত্রক ভাটপাড়া, নৈহাটি, খড়দহ, বারাকপুর, উত্তর দমদম, হাবড়া, গারুলিয়া, দুর্গাপুর, ডোমকল, দিনহাটা, কামারহাটি, টিটাগড়, বনগাঁ, হলদিয়ার মতো বড় পুরসভাগুলির পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকা আটকে রেখে ফের একবার রাজ্যের উন্নয়নের গতি থমকে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলে অভিযোগ উঠল কেন্দ্রের বিরুদ্ধে।  পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘রাজনীতি ছাড়া কিছুই নয়! বাংলার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা কার্যত প্রথায় পরিণত হয়ে গিয়েছে। এটা তার আরও একটি উদাহরণ। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুরসভাগুলিকে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, যা পুরোপুরি উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’ দ্রুত এই ৪০টি পুরসভার টাকা ছাড়ার দাবি জানিয়ে শীঘ্রই নগরোন্নয়ন মন্ত্রককে চিঠি দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন ফিরহাদ। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যের ১২৬টি পুরসভার জন্য পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ১০৬৬ কোটি টাকা দেওয়ার কথা। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের প্রথম কিস্তির মাত্র ৩৫৭ কোটি টাকা সম্প্রতি অনুমোদন করেছে কেন্দ্র, যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ পুরদপ্তরের আধিকারিকদের। কারণ, একেই তো প্রায় দু’বছর পর ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষের প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়া হল রাজ্যকে। তার উপর ৪০টি পুরসভার জন্য কোনও অর্থই বরাদ্দ করা হল না। এই পুরসভাগুলিকে টাকা না দেওয়ার পিছনে কেন্দ্র কী যুক্তি দিয়েছে? সূত্রের খবর, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যের জিএসডিপি বৃদ্ধির হারের তুলনায় সংশ্লিষ্ট পুরসভার সম্পত্তি কর আদায়ের হার বেশি হলে তবেই মেলে এই খাতের টাকা। আবার নির্বাচিত বোর্ড থাকাও বাধ্যতামূলক। কেন্দ্রের যুক্তি, কিছু ক্ষেত্রে বোর্ড না থাকার কারণে টাকা আটকানো হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্পত্তি কর আদায়ের হারে ঘাটতি থাকায় ৪৯টি পুরসভার টাকা দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের এই যুক্তি একেবারেই মানতে নারাজ রাজ্য সরকার। তাদের যুক্তি, পুরসভাগুলিই নির্দিষ্ট পোর্টালে সরাসরি সমস্ত তথ্য দাখিল করে। কোনও পুরসভা কেন তাদের সম্প্রতি কর বাবদ আদায় কম করে দেখাবে? এই প্রেক্ষিতে ৪০টি পুরসভার বাসিন্দাদের নাগরিক পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে ন্যায্য প্রাপ্যের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে বলেই স্থির করেছে রাজ্য প্রশাসন।
  • Link to this news (বর্তমান)