এই সময়: অনেকে বলেন, সংসারে শাশুড়ি–পুত্রবধূর অশান্তির সূত্রপাত হয় হেঁশেলের দখল নিয়ে। কার হাতে থাকবে রান্নাঘরের অধিকার? বাস্তবে সেই প্রশ্নে এ বার মামলা দায়ের হলো হাইকোর্টে! প্রাথমিক আবেদন শুনেই বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, তা হলে কি এ বার পুলিশকে রান্নাঘরে ঢুকতে হবে দখল ঠিক করতে?
প্রথমে মামলায় আমল না দিয়ে বিষয়টি সিনিয়র সিটিজেনদের জন্যে তৈরি ফোরামে পাঠিয়ে দিতে চাইলেও শেষ পর্যন্ত অবশ্য চিৎপুর থানাকে আগামী এক মাস আবেদনকারী বৃদ্ধার বাড়িতে এক দিন অন্তর মহিলা কনস্টেবল পাঠিয়ে অশান্তি যাতে না বাড়ে, তাতে নজর রাখার নির্দেশ দেন বিচারপতি। এই সময়ের মধ্যে মামলাকারীকে সংশ্লিষ্ট ফোরামে আবেদন করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
উত্তর কলকাতার চিৎপুরের বাসিন্দা বছর বাষট্টির বৃদ্ধা হাইকোর্টে মামলা করেছেন একমাত্র পুত্র ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। তাঁর বক্তব্য, চিৎপুরে তাঁর স্বামী গায়ে গায়ে দু’টি বাড়ি ভাড়া নিয়েছিলেন। মেয়েদের বিয়ের পরে এখন একটি বাড়িতে ছেলে তার সংসার নিয়ে থাকে। আর একটি বাড়ির রান্নাঘরও তারা দখল করে নিয়েছে। ফলে তাঁকে একটিমাত্র ঘরে থাকতে হয়, সেই ঘরেই রান্না করতে হয়।
থানায় অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। ফলে বাধ্য হয়ে মামলা করতে হয়েছে। যদিও তাঁর ছেলের আইনজীবী বলেন, তাঁর স্ত্রী অসুস্থ হওয়ার পরে মা স্বেচ্ছায় ওই রান্নাঘর থেকে নিজের গ্যাস ওভেন–সহ রান্নার যাবতীয় সরজ্ঞাম সরিয়ে নেন। এখন তৃতীয় পক্ষের ইন্ধনে মামলা করেছেন। আইনজীবীদের মতে, এখানে তৃতীয়পক্ষ কে তা উল্লেখ করা না হলেও বৃদ্ধার মেয়েদের দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বিচারপতি ঘোষ প্রথমে এই মামলায় কোনও নির্দেশ দিতেই অস্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, একেবারে প্রাইভেট ডিসপিউট। পুলিশ এর মধ্যে ঢুকবে কেন? সংশ্লিষ্ট ফোরামে গিয়ে বৃদ্ধাকে আবেদন করতে পরামর্শ দেন তিনি। যদিও আইনজীবীর কাতর আর্জিতে শেষ পর্যন্ত আদালত সাময়িক ভাবে পুলিশকে বিষয়টি দেখতে বলে।