জেলা সম্পাদক নির্বাচনে চারটি জেলায় এখনও পর্যন্ত নিয়ম লঙ্ঘন হয়েছে। তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে সিপিএমের দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক। উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়া রাজ্যের সব জেলার সম্মেলন হয়ে গিয়েছে। তার মধ্যে চারটি জেলায় দলীয় নিয়ম লঙ্ঘন করে ‘ব্যতিক্রমী’ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিপিএম। তা নিয়েই কয়েকটি জেলার রাজ্য কমিটির সদস্যেরা প্রশ্ন তোলেন বৈঠকে। সিপিএম সূত্রে খবর, রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, পরিস্থিতির কারণে কয়েকটি ক্ষেত্রে পার্টির তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে তা সাময়িক।
ফেব্রুয়ারির ২২-২৫ তারিখ হুগলির ডানকুনিতে হবে রাজ্য সম্মেলন। রাজ্য কমিটির বৈঠকে রাজ্য সম্মেলন সংক্রান্ত নির্দেশিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আগামী ২০ এপ্রিল কৃষক, শ্রমিক, ক্ষেতমজুর এবং বস্তি সংগঠন যে ব্রিগেড সমাবেশ ডেকেছে, তাতে জমায়েত করার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।
বাঁকুড়া, মালদহ, পূর্ব মেদিনীপুরের পরে কোচবিহারে দলের বিধি লঙ্ঘন করে সম্মেলন থেকে সম্পাদক নির্বাচন করেছে সিপিএম। সিপিএম নিয়ম করেছে, জেলা কমিটিতে ৭০ বছর বয়সের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না। গত দু’মেয়াদের সম্পাদক অনন্ত রায় কয়েক মাস আগেই ৭০ পেরিয়েছেন। কিন্তু ‘বিশেষ কারণে’ তাঁকেই ফের কোচবিহারের সম্পাদক করে দল। সিপিএম সূত্রে খবর, নতুন সম্পাদক হিসাবে যিনি দৌড়ে ছিলেন, সেই মহানন্দ সাহার নামে আপত্তি ছিল অনন্ত এবং আর এক রাজ্য কমিটির সদস্য তমসের আলির। আবার রাজ্য সিপিএম চেয়েছিল, কোচবিহারের মতো জেলায় রাজবংশী অংশের কেউ সম্পাদক হোন। কিন্তু নতুন কোনও রাজবংশী ‘মুখ’ পাওয়া যায়নি। আবার অনন্ত নিজে রাজবংশী অংশের প্রতিনিধি। সব দিক রক্ষা করতে অনন্তকেই জেলা সম্পাদক করার বিষয়টি স্থির করা হয়।
সিপিএমের দলীয় নিয়ম অনুযায়ী, এক ব্যক্তি একটি স্তরে তিন মেয়াদের বেশি সম্পাদক থাকতে পারেন না। কিন্তু এর আগে দেখা গিয়েছে মালদহে অম্বর মিত্র চতুর্থ বারের জন্য সম্পাদক হয়েছেন। আবার গত রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন নিরঞ্জন সিহি। তিনিও তিন বারের মেয়াদ পূর্ণ করে চতুর্থ বারের জন্য দায়িত্ব নিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, মালদহ এবং পূর্ব মেদিনীপুর— দুই জেলার ক্ষেত্রেই বিকল্প নাম নিয়ে দলের মধ্যে একাধিক মত তৈরি হয়েছিল। ‘অশান্তি’ এড়াতেই ‘ব্যতিক্রমী’ সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল সিপিএমকে।