টাকার জন্য এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠল বন্ধুর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি কলকাতার কসবার। গত ৩১ জানুয়ারি দোকান থেকে নিখোঁজ হয়ে যান সানু রাম নামে ওই ব্যবসায়ী। কসবা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের কাছে জুতোর দোকান রয়েছে তাঁর। সানুর স্ত্রীর দাবি, ওই দিন রাত ৮টা নাগাদ স্বামীর সঙ্গে শেষ বার ফোনে কথা হয়। তখন সানু তাঁকে জানিয়েছিলেন, তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসবেন। কিন্তু রাত বাড়লেও বাড়ি না ফেরায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তাঁর স্ত্রী।
সানুর স্ত্রীর দাবি, স্বামী বাড়িতে না ফেরায় তাঁকে ফোন করেন। কিন্তু ফোন ‘আনরিচেবল’ বলছিল। সন্দেহ হওয়ায় সানুর স্ত্রী থানায় গিয়ে প্রথমে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে অপহরণের অভিযোগও করেন তিনি। সেই অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সানুকে শেষ বারের মতো যাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছিল তিনি তাঁর পূর্ব পরিচিত। অনুপ মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তিরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ জানতে পারে, সানুর বন্ধু অনুপ। এখানেই ঘটনা অন্য দিকে মোড় নেয়। তা হলে কি দু’জনেই একসঙ্গে নিখোঁজ হয়েছেন? এই প্রশ্নের উত্তর যখন পুলিশ খুঁজছে, তখনই তারা দেখে ব্যবসায়ী সানুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে অনলাইনে এক লক্ষ টাকা লেনদেন হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, লেনদেন হওয়া সেই টাকা দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে অমিত নস্কর নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে। সেই সূত্র ধরে অমিত নস্করকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, একটি কিউআর কোড স্ক্যান করে ওই টাকা তাঁকে পাঠিয়েছেন অনুপ এবং তাঁর এক সঙ্গী দীপ হালদার। অনুপের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ। অবশেষে তাঁর নাগালও পেয়ে যায় তারা। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় অনুপ জানিয়েছেন, সানুকে খুন করা হয়েছে। তার পর তাঁর দেহ বারুইপুরের একটি খাল থেকে উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় পাঁচ জনের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। তার মধ্যে অনুপ-সহ চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, টাকার জন্য খুন করা হয়েছে সানুকে। তবে নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।