• মেদিনীপুর মেডিক্যালের স্যালাইনে ভেজাল ছিল না, আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়ে দাবি রাজ্য সরকারের
    আনন্দবাজার | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইন-কাণ্ডের রিপোর্ট জমা পড়ল কলকাতা হাই কোর্টে। রাজ্যের তরফে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের বেঞ্চে রিপোর্টটি জমা দেওয়া হয়েছে। রাজ্য জানিয়েছে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের স্যালাইনে ভেজাল বা দূষণ ছিল না। এই স্যালাইনের গুণমানের দায় রাজ্য এড়াতে পারে না, জানান প্রধান বিচারপতি।

    জানুয়ারি মাসের শুরুতে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে সন্তান প্রসবের পর পাঁচ মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। অভিযোগ, স্যালাইন দেওয়ার পরেই তাঁরা অসুস্থ বোধ করেন। পরে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়। পরে মৃত্যু হয় অন্য এক প্রসূতির সন্তানেরও। রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইন দেওয়ার পরেই এই অসুস্থতা এবং মৃত্যু বলে দাবি করা হয়। অভিযোগ, গত ১০ ডিসেম্বর ড্রাগ কন্ট্রোলার একটি নির্দিষ্ট সংস্থাকে ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল। তার পরেও কেন এই স্যালাইন রাজ্যের হাসপাতালে ব্যবহার করা হচ্ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই ঘটনায় নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ১২ জন চিকিৎসককে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করেন। হাসপাতালের সুপার এবং এক জুনিয়র ডাক্তারকেও পরে সাসপেন্ড করা হয়। স্যালাইন-কাণ্ড নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয় কলকাতা হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার সে বিষয়ে রিপোর্ট আদালতে জমা দিল রাজ্য।

    মোট দু’টি ভাগে রিপোর্ট জমা দিয়েছে সরকার। রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট (এজি) কিশোর দত্ত জানান, রিপোর্টের দ্বিতীয় অংশ আদালতের কাছেই রাখা হোক। ফলে ওই অংশ এখনই প্রকাশ্যে আনা হচ্ছে না। রিপোর্টের প্রথম অংশ আদালত পড়বে এবং মামলাকারীদেরও দেওয়া হবে। এজি আদালতে দাবি করেছেন, মেদিনীপুরের হাসপাতালের স্যালাইনে কোনও ভেজাল বা দূষণ ছিল না।

    রিপোর্ট জমার আগেই প্রধান বিচারপতি রাজ্যের কাছে ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চান। এজি জানান, ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। মৃতদের পরিবারের সদস্যকে চাকরির প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। এর পরেই প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘সংবাদপত্রে পড়লাম, সব স্যালাইন তুলে নেওয়া হয়েছে। তা হলে ওই সব স্যালাইন আপনারা সরবরাহ করেছিলেন সেটা কি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না? স্যালাইনের গুণমান নিয়ে রাজ্যের তো দায় রয়েছে।’’

    স্যালাইন-কাণ্ডে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবারের রিপোর্টে রাজ্যের বক্তব্য পড়বেন বিচারপতি। মামলাকারীদের তা পড়তে দেওয়া হবে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ১০ দিন পর।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)