• ফের বিনিয়োগ জিন্দালদের, আশায় বুক বাঁধছে শালবনি, জমিদাতাদের মনের কথা শুনল ‘এই সময়’
    এই সময় | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • জিন্দাল গোষ্ঠী শালবনিতে ইস্পাত কারখানা গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠেনি।

    ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও ইস্পাত কারখানা গড়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেটাও বাস্তবায়িত হয়নি।

    শেষ ভরসা BGBS-এ সজ্জন জিন্দালের নয়া ঘোষণা।



    শালবনিতে ১৬ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ইস্পাত কারখানার বদলে ৮০০ মেগা ওয়াটের দু’টি পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পরে আরও ১৬ হাজার কোটি লগ্নি করে ক্যাপাসিটি দ্বিগুণ করার ঘোষণা। শালবনিতে আদৌ গড়ে উঠবে পাওয়ার প্ল্যান্ট? ফের আশায় বুক বাঁধা শুরু করেছেন শালবনির জমিদাতারা। কারণ, তাঁদের আশা পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি হলে তাঁদের কর্মসংস্থান হবে।

    যে জমিতে ইস্পাত কারখানা তৈরি হওয়ার কথা ছিল, তার একাংশে সিমেন্ট কারখানা তৈরি করেছে জিন্দাল গোষ্ঠী। বুধবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (BGBS-র) মঞ্চ থেকে সজ্জন বলেন, ‘শালবনিতে আমরা ১৬ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে দু'টি ৮০০ মেগা ওয়াটের (মোট ১৬০০ মেগাওয়াট) পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করব।’ এই ঘোষণার পর কী বলছেন শালবনির মানুষ? উত্তর খুঁজে দেখল এই সময় অনলাইন।

    ইস্পাত কারখানা তৈরি করতে ৪ হাজারের বেশি একর জমি জিন্দালদের দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্য়ে ৮৪৯ একর জায়গায় সিমেন্ট কারখানা তৈরি হয়েছে। বাকি জমি খালি পড়ে রয়েছে। শালবনি ব্লকের কুলফেনি, জামবেদিয়া, আসনাশুলি, নতুনডিহি,কাশিজোড়া, বর্জু-সহ প্রায় ৩০টি গ্রামের কয়েকশো জমিদাতা রয়েছেন। কাশিজোড়ার আসনাশুলি এলাকার বাসিন্দা আদিত্য মাহাতো বলেন, ‘সেই ২০০৮ সাল থেকেই তো আমরা আশায় বসে আছি। আমাদের শুধু প্রতিশ্রুতিই দেওয়া হচ্ছে। জমি দিয়েছিলাম (২০০৮ সালে) ইস্পাত কারখানা হবে বলে। ১০ বছর পর হলো একটা সিমেন্ট কারখানা। হাজার হাজার কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কর্মসংস্থান হলো মাত্র ৫০০-৬০০ জনের। চাকরি প্রাপকদের মধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা মেরেকেটে ২০০-২৫০ জন। সৌরভ বললেন ইস্পাত কারখানা করব। সেটাও হলো না! ফের একবার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। দেখা যাক।’

    জমিদাতাদের সংগঠনের সম্পাদক পরিষ্কার মাহাতো বলেন, ‘কর্ম সংস্থানের দাবিতে ২০১৪ সাল থেকে আমরা আন্দোলন করছি। আমরা চাই, বিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ার যে ঘোষণা করেছেন সজ্জন জিন্দাাল তা অবিলম্বে বাস্তবায়িত হোক। আমরা মার্চ মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করব। কিছু না হলে, আমরা সরাসরি সজ্জন জিন্দালের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’

    অন্যদিকে শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ বলেন, ‘শালবনিতে কোনও অশান্তি নেই, সিমেন্ট কারখানাতেও শ্রমিক আন্দোলন নেই। জিন্দাল, ডালমিয়া গোষ্ঠী তা স্বীকারও করেন! তার পরেও এখনও কেন বড় শিল্প হলো না, সেটা আমাদেরও ভাবায়।’

    উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর জিন্দালদের প্রস্তাবিত ইস্পাত কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তবে, ওই দিনই ফেরার পথে তাঁর কনভয়ে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়। শুরু হয় মাওবাদীদের আন্দোলন। জিন্দালরা ইস্পাত কারখানার পরিকল্পনা বাতিল করে। তার পর দেড় দশক অতিক্রান্ত। ইস্পাত কারখানার বদলে সিমেন্ট কারখানা গড়ার প্রস্তুতি নেয় জিন্দালেরা। ২০১৮ সালে সেই কারখানার উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

  • Link to this news (এই সময়)