বৃহস্পতিবার থেকেই ডেউচা-পাচামিতে কাজ শুরুর কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো এ দিন ডেউচার মহম্মদবাজারের চাঁদা এলাকায় কাজ শুরু হলো। যদিও সেই কাজ শুরু করতে বেলা গড়িয়েছে বলেই স্থানীয়দের দাবি। যদিও জেলা প্রশাসনের একটা অংশ সেই দাবি মানতে নারাজ। বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায় জানান, প্রাথমিকভাবে মাটির নিচ থেকে ব্যাসল্ট তোলার কাজ হবে। স্থানীয় লোকজন এই কাজে নিযুক্ত হবেন। কোনওভাবেই জল-জমি-জঙ্গল নষ্ট করে কাজ হচ্ছে না বলে জানান তিনি। সঙ্গে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
জেলা প্রশাসনের কর্তারা এ দিন সকালে এলাকা পরিদর্শনের সময়ে স্থানীয় মহিলারা পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছিলেন। স্থানীয় কিছু যুবকও কাজের দাবিতে জমায়েত করেন। জেলাশাসক বলেন, ‘এই এলাকার কোনও মানুষের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সেই ব্যবস্থাই করা হবে। এখানকার মা-বোনেরা সকলেই খুশি এই কাজ শুরু হওয়ার জন্য।’ ওই এলাকায় প্রচুর গাছ প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানা তিনি।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১২ হাজার বর্গ কিমি জায়গা জুড়ে থাকা ডেউচা-পাচামিতে প্রাথমিকভাবে খনিমুখ খুলে খননকার্য হবে ৩০ শতাংশ এলাকায়। বাকি ৭০ শতাংশ এলাকায় ভূগর্ভস্থ খনন এবং গ্যাসিফিকেশনের মাধ্যমে উৎপাদন করা হবে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে ৩২৬ একর ম্যাটিং এলাকায় কাজ শুরু হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দ্রুত কাজ শুরুর লক্ষ্যে জানুয়ারি মাসেই সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ, ডিজি রাজীব কুমার-সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকেরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, এই ৩২৬ একর জায়গায় প্রাথমিকভাবে খোলা মুখ খনির কাজ করা হবে। মাটির নিচেই রয়েছে ব্যাসল্ট শিলার স্তর। সেটিকে তোলার পর কয়লা উত্তোলনের কাজ শুরু হবে।
তবে বৃহস্পতিবার কাজ শুরুর ব্যস্ততা শুরু হতেই স্থানীয় আদিবাসীদের একাংশ ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মথুরা পাহাড়িতে প্রশাসনিক আধিকারিকদের দেখে ভিড় করেন চাঁদা গ্রামের মহিলারা। তাঁরা বলেন, ‘আমাদের কোনও জমি নেই, শুধু বাড়ি আছে। আমরা চাই শিল্প হোক, কিন্তু আমাদের কর্মসংস্থান ও বাসস্থানেরও ব্যবস্থা করা হোক।’ চাকরির দাবিতে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন তাঁরা।