মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে BGBS-এর মাঝেই কাজ শুরু দেউচা-পাচামিতে
প্রতিদিন | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে নয়া সংযোজন। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বীরভূমের দেউচা-পাচামিতে শুরু হয়ে গেল কাজ। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে হয়ে গেল ভিতপুজো। জেলাশাসক জানালেন, পরিকাঠামো একেবারে প্রস্তুত। ব্যাসল্ট, ব্ল্যাকস্টোন উত্তোলন করতে পারবেন এলাকাবাসী। তাঁদের জন্য কাজের সুযোগ মিলবে। এদিন সকাল থেকে দেউচা-পাচামি প্রকল্পকে ঘিরে রেখেছিলেন স্থানীয় মানুষজন। অভিযোগ ছিল, যথার্থ পুনর্বাসন, চাকরি ছাড়া কাজ শুরু করা যাবে না। কিন্তু জেলাশাসক স্পষ্টই জানালেন, এখানকার মা-বোনরা খুব খুশি। তাঁদের ৯০ শতাংশ এখানে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। পুনর্বাসন বা চাকরি নিয়ে কারও কোনও অসন্তোষ নেই।
বুধবার, বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের প্রথম দিন সূচনা ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শিল্প বিকাশের কথা বলতে গিয়ে বীরভূমে দেউচা-পাচামি কয়লাখনির কথা উল্লেখ করেন। জানান, এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লাখনিতে রয়েছে ২১০ কোটি ২০ লক্ষ টন কয়লা। এরপর নিজেই সুখবর শোনান। বলেন, পরিকাঠামো একেবারে তৈরি। চাইলে বৃহস্পতিবার থেকেই সেখানে কাজ শুরু করা যেতে পারে। বিনিয়োগকারীদের কাছে তাঁর আহ্বান, আসুন, কাজ করুন।
মুখ্যমন্ত্রীর এত বড় ঘোষণার পরই তৎপরতা শুরু হয়ে যায় দেউচা-পাচামিতে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কাজের তোড়জোড়ের ছবিটা চোখে পড়ে। একে একে সেখানে হাজির হন মহকুমা শাসক সুপ্রতিম সিনহা, জেলাশাসক বিধান রায়, পুলিশ সুপার আমনদীপ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা ভূমিপুত্র সামিরুল ইসলাম। ছিলেন আশপাশের বহু মানুষজন। দেউচা-পাচামির চাঁদা মৌজার ১২ একর জমিতে প্রথমে কাজ শুরু হয়। সেখানেই সকলের উপস্থিতিতে হয় ভিতপুজো।
জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, ”এখানকার ভূপ্রাকৃতিক গঠন অনুসারে, মাটির পরই রয়েছে ব্যাসাল্ট, তারপর কয়লা। কয়লা তুলতে গেলে ব্যাসাল্ট স্তরটিকে আগে তুলতে হবে। সেই কাজ শুরু হয়ে গেল। স্থানীয়রাই কাজ করবেন। তাতে এখানকার মা-বোন-দিদিরা খুশি। কিছু কিছু জায়গায় জমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি আছে। তা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করা হচ্ছে।” সামিরুল ইসলামের কথায়, ”এখানে কাজ শুরু হয়ে গেল আজ থেকে। ৯০ শতাংশ স্থানীয় মানুষ কাজ পেয়েছেন। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার সবাই আছেন। এরপরও যেখানে কাজ হবে, সেখানকার একজন মানুষও বঞ্চিত হবেন না। চাকরি কিংবা কাজ পাবেন। মুখ্যমন্ত্রীর তেমনই নির্দেশ আছে। জেলাশাসক তা দেখে নেবেন।” সবমিলিয়ে দেউচা-পাচামিকে ঘিরে এতদিন যে স্বপ্ন দেখা হচ্ছিল, এবার তার বাস্তব রূপায়ণ হল মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতায়।