ছৌ নৃত্যকে ‘ধ্রুপদী’ মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, তা স্পষ্ট করল না কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। ‘সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্য’ থাকা সত্ত্বেও ছৌকে কেন ‘ধ্রুপদী’ নৃত্যের মর্যাদা দেওয়া হয়নি? সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে জানতে চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টচার্য। রাজ্যসভায় বৃহস্পতিবার সে প্রশ্নের লিখিত জবাব দিল মন্ত্রক। ছৌ নৃত্যশৈলীর আরও বিকাশের জন্য কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, সে সব সবিস্তার জানানো হয়েছে শমীককে দেওয়া জবাবে। কিন্তু ‘ধ্রুপদী’ মর্যাদা মেলা সম্ভব কি না, তা জানাননি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতিমন্ত্রী।
শমীককে দেওয়া জবাবের প্রথম লাইনেই সংস্কৃতি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়ত লিখেছেন, ‘‘ছৌ নৃত্য-সহ বিভিন্ন পরম্পরাগত শিল্পকলার সংরক্ষণ ও প্রসারে ভারত সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।’’ কিন্তু পরের লাইনেই মন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, ছৌ-কে ‘ধ্রুপদী’ মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত সংস্কৃতি মন্ত্রক নিতে পারবে না। মন্ত্রকের অধীনে থাকা স্বশাসিত সংস্থা ‘সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি’ এই সব সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে বলে বাংলার বিজেপি সাংসদকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী।
ছৌ নৃত্যকে যে অবহেলা করা হচ্ছে না, তেমন বার্তা দেওয়ার চেষ্টা সংস্কৃতি মন্ত্রকের জবাবে স্পষ্ট। ২০১৮ সালে ‘সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি’ ঝাড়খণ্ডের চন্দনকেয়ারিতে ‘ছৌ কেন্দ্র’ গড়ে তুলেছে বলে মন্ত্রক জানিয়েছে। সংস্কৃতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিভিন্ন পরম্পরাগত শিল্পকলা, লোকশিল্প এবং জনজাতীয় শিল্পকলার প্রসার ও সংরক্ষণের জন্য সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি ‘গুরুশিষ্য পরম্পরা’র মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। পুরুলিয়া ছৌ, সরাইকেলা ছৌ, ময়ূরভঞ্জ ছৌ-সহ সব ধরনের ছৌ নৃত্যের জন্য কোন রাজ্যের কোন অঞ্চলে এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চলছে, তা-ও সংসদে পেশ করা জবাবে জানানো হয়েছে।
ছৌয়ের প্রসার, সংরক্ষণ বা প্রশিক্ষণের জন্য অ্যাকাডেমি কী করছে, তা নিয়ে সবিস্তার বক্তব্য থাকলেও, শমীকের মূল প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব কিন্তু শেখাওয়তের উত্তরে অমিল। ছৌ কি ‘ধ্রুপদী’ মর্যাদা পাবে? এ প্রশ্নের কোনও স্পষ্ট উত্তর মন্ত্রকের জবাবে নেই। বিজেপি সাংসদ শমীক কি এই জবাব পেয়ে খুশি? তিনি খুশি, না অখুশি, সে বিষয়ে শমীক কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু বলেছেন, ‘‘আমি আমার দাবিতে অনড় আছি। ছৌ নৃত্যের জন্য ধ্রুপদী মর্যাদা আদায় করতে যা যা করতে হয়, আমরা করব। আমরা এখানে থামছি না।’’