• ক্যানসার আক্রান্তের পাশে দাঁড়াতে বার্তা
    আনন্দবাজার | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • রোগ থেকে মুক্তিই একমাত্র লক্ষ্য নয়। বরং আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে রোগীর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তকে উপলদ্ধি করে যথাযথ ব্যবস্থা করাও চিকিৎসকের অন্যতম দায়িত্ব। যা এক জন ক্যানসার রোগীর সুস্থতা ও নতুন জীবনের পথে অন্যতম সহযোগিতার মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। মঙ্গলবার বিশ্ব ক্যানসার দিবসে সেই সঙ্কল্পের কথাই উঠে এল শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ক্যানসারজয়ীদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে।

    চলতি বছরে ‘ইউনাইটেড বাই ইউনিক’, এই থিমকে সামনে রেখেই পালিত হল বিশ্ব ক্যানসার দিবস। যা আগামী তিন বছর ধরে প্রচার করা হবে। মেডিকা ক্যানসার হাসপাতাল আয়োজিত এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত চিকিৎসকেরাও জানাচ্ছেন, ক্যানসারের চিকিৎসা জনকেন্দ্রিক করে তুলতে হবে। সিনিয়র ক্যানসার চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ক্যানসার আক্রান্ত মানেই জীবন শেষ, এটা যেন রোগী না ভাবেন। বরং যে রোগীর যেমন ক্ষমতা, তাঁকে তেমন চিকিৎসা দিতে হবে। যাতে কেউ বিনা চিকিৎসায় না থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘রোগের বাইরে গিয়ে, আগে দেখতে হবে ব্যক্তিকে। শুধু মস্তিষ্ক দিয়ে নয়। চিকিৎসা করতে হবে হৃদয় দিয়ে।’’

    ওই হাসপাতালের স্ত্রী-রোগ ক্যানসার চিকিৎসক অরুণাভ রায় জানাচ্ছেন, ক্যানসার আক্রান্তদের মধ্যে পাঁচ শতাংশের বিপুল খরচ করে চিকিৎসার সামর্থ্য রয়েছে। আর ২৫ শতাংশ শুধু সরকারি চিকিৎসার উপরেই নির্ভরশীল। মাঝের বড় অংশের মাঝামাঝি খরচের সামর্থ্য রয়েছে। সেই পথগুলি রোগীর সামনে উন্মোচন করতে হবে চিকিৎসককেই। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্যানসারজয়ী নাট্যকার চন্দন সেন। আগামী দিনে তাঁর পরিচালনায় ক্যানসারজয়ীদের নিয়ে একটি নাটকও মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ক্যানসার বিভাগের অধিকর্তা, চিকিৎসক সৌরভ দত্ত বলেন, ‘‘নাটক হল সৃজনশীলতার প্রকাশ। যে সমস্ত রোগীর মধ্যে সেই প্রতিভা ছিল, তা আবারও তুলে ধরার লক্ষ্যেই ‘ক্যানসার জয়ের পরে, মঞ্চ জয়ের পালা’র প্রচেষ্টা।’’

    একটি ডিম্বাশয় থেকে পায়ুদ্বার পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিল ক্যানসার। ২০২০-তে ক্যানসার আক্রান্ত অংশ অস্ত্রোপচারে বাদ দেওয়ার পরে কেমোথেরাপির সময়ে সমস্ত চুল উঠে যাওয়ায় কর্মস্থলে প্রতিনিয়ত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছিল হাওড়ার বৈশালী ভট্টাচার্যকে। সেই পরিস্থিতি উপলদ্ধি করে তরুণীকে হাল না ছেড়ে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়ার পথে হাত বাড়িয়েছিলেন অরুণাভ। এখন এক কন্যার মা বৈশালীকে এ দিন থেকে আবারও কাজের জগতে ফেরার সুযোগ করে দিল ওই হাসপাতাল। সুবীরের কথায়, ‘‘ক্যানসার আক্রান্তের প্রতিটি অভিজ্ঞতাই অনন্য। সেগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করে এমন একটা বিশ্ব তৈরি করতে হবে, যেখানে শুধু ভাবনা নয়, বাঁচার জন্য থাকবে ভরসার হাত।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)