বিয়ে করতে আমেরিকা পাড়ি, কনেকে ফেরত পাঠালেন ট্রাম্প, তার পর...
এই সময় | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
বিয়ের স্বপ্ন নিয়ে বিদেশ পাড়ি। কিন্তু, গলায় মঙ্গলসূত্র ও সিঁথিতে সিঁদুর পরার আগেই ভাঙল সেই স্বপ্ন। ‘ট্রাম্প নীতি’-র কারণে বিয়ের আগেই মার্কিন মুলুক থেকে ফেরত পাঠানো হলো বিয়ের কনে সুখজিৎ করকে। বছর ছাব্বিশের ওই তরুণীর ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন চিন্তিত গোটা পরিবার।
একশোরও বেশি অভিবাসীকে অবৈধ তকমা দিয়ে ভারতে ফেরত পাঠিয়েছে ট্রাম্প সরকার। হোয়াইট হাউসে আসার পর অবৈধ অধিবাসীদের নিজেদের দেশে ফেরত পাঠাতে বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট করছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবারই ১০৪ জন অবৈধ অভিবাসীকে নিয়ে অমৃতসর বিমানবন্দরে নামে আমেরিকার সামরিক বিমান, সি-১৭। মার্কিন মুলুক থেকে ঘাড়ধাক্কা দিয়ে ভারতে পাঠানো এই ১০৪ অভিবাসীকে নিয়ে চিন্তায় তাঁদের পরিবার। এই দলেই ছিলেন ২৬ বছরের সুখজিৎ।
পাঞ্জাবের বীরপাল গ্রামের বাসিন্দা সুখজিৎ তাঁর প্রেমিককে বিয়ে করতে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে আমেরিকায় পৌঁছে ছিলেন। কিন্তু বিয়ে হওয়ার আগেই মার্কিন মুলুকে আটক করা হয় তাঁকে। তাই সে বিয়ে আর হলো না। বদলে ট্রাম্পের ভারতে পাঠানো প্রথম বিমানেই তুলে দেওয়া হয় বিয়ের কনে সুখজিৎকে। স্কুল পাশ সুখজিৎ আমেরিকা পৌঁছছিলেন এক এজেন্টের হাত ধরে। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেও লাভ হলো না কিছুই। মেয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে সেই নিয়ে এখন মাথা চাপড়াচ্ছেন তাঁর মা ও দাদা।
শুধু সুখজিৎই নয়, আমেরিকা ফেরত পাঠানো বাকি ১০৩ অভিবাসীদের গল্পটা কম বেশি একইরকমের। আমেরিকা পৌঁছতে কেউ এজেন্টকে দিয়েছেন ৩০ লক্ষ, কেউ ৫০ লক্ষ, কেউ আবার কোটি টাকা। পাঞ্জাবের চাষি স্বর্ণ সিং তাঁর প্রায় ৩ একর জমি বন্ধক রেখে ছেলে আকাশদীপকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু, স্টুডেন্ট ভিসা না পেয়ে আকাশদীপ দুবাইতে ট্রাক ড্রাইভারের কাজ করে টাকা জমান। তার পর সেই টাকা এজেন্টকে গিয়ে আমেরিকা পৌঁছয় তিনি। সব মিলিয়ে খরচের পরিমাণ ষাট লাখেরও বেশি। সব হারিয়ে ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়েই এখন বেশি চিন্তায় স্বর্ণ সিং। এই একইভাবে এজেন্টকে ধরে ‘ডানকি’ রুটে মার্কিন মুলুকে গিয়েছিলেন বাস ড্রাইভার দালের সিং থেকে অজয়দীপ সিংও। সবার একই ভবিতব্য নির্ধারিত হয়ে যায় ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিতে।