এই সময়: প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় রিঙ্গার্স ল্যাকটেট স্যালাইনে কোনও ত্রুটি ছিল না বলে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে বৃহস্পতিবার রিপোর্ট দিয়ে জানাল রাজ্য সরকার। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ প্রসূতির সিজ়ারিয়ান সেকশন বা সি–সেকশনের পর ৯ জানুয়ারি তাঁদের এক জনের মৃত্যু হয়, চার জন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তাঁদের সবাইকে দেওয়া হয়েছিল রিঙ্গার্স ল্যাকটেট— পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল্স নামে সংস্থার তৈরি যে স্যালাইন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল ঘটনার আগেই। তবে মেদিনীপুর মেডিক্যালে এক প্রসূতির মৃত্যু ও চার প্রসূতির অসুস্থ হওয়ার ঘটনা নিয়ে এ দিন হাইকোর্টে দেওয়া রাজ্যের রিপোর্টে চিকিৎসায় গাফিলতির দিকে ইঙ্গিত করা হয়।
হাইকোর্ট সূত্রের খবর, রাজ্য তার রিপোর্টে জানিয়েছে, ঘটনার রাতে ডিউটিতে কোনও সিনিয়র চিকিৎসক, মেডিক্যাল অফিসার ছিলেন না এবং পাঁচ জনের সি–সেকশনে সব ক্ষেত্রে সমান নজরদারি করা সম্ভব হয়নি। স্যালাইন প্রস্তুতকারক সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যাল্স–ও এ দিন হাইকোর্টে দাবি করেছে যে, তাদের স্যালাইনে কোনও ত্রুটি নেই।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতির মৃত্যুতে স্যালাইন–বিতর্কে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে রাজ্য জানায়, রাজ্যের ল্যাবে পাঠানো স্যালাইনের নমুনা পরীক্ষা করে তাতে কোনও সমস্যা দেখাযায় নি। স্যালাইন প্রস্তুতকারক সংস্থার কাছে প্রধান বিচারপতি জানতে চান, তা হলে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল? সংস্থাটি জানায়, রাজ্যের হেফাজতে থাকা তাদের স্যালাইন পাঠানো হয়েছিল কেন্দ্রীয় ল্যাবে, সেখানেও ক্লিন চিট দেওয়া হয়েছে।
অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, রিপোর্টে রাজ্যও একই কথা উল্লেখ করেছে, স্যালাইনে সমস্যা ছিল না। রাজ্যকে প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, ‘আপনারা কি নিজেদের স্যালাইন ব্যবহার করতে পারেন না? এমন ইন্ডাস্ট্রি (স্যালাইন প্রস্তুতকারক) করতে গেলে কত খরচ হতে পারে? রাজ্যের নিজস্ব কোনও ওষুধ কোম্পানি কি আদৌ আছে?’ এই ব্যাপারে তাঁর কোনও কিছু জানা নেই বলে এজি জানান। তাঁর বক্তব্য, গোটা বিষয়টি নিয়ে সিআইডি তদন্ত করছে।
রাজ্য এ দিন হাইকোর্টে আরও জানায়, মৃত ও অসুস্থদের পরিবার ক্ষতিপূরণ পেয়েছে, চাকরি দেওয়া হচ্ছে মৃত প্রসূতির পরিবারের এক সদস্যকে।
স্যালাইন–বিতর্কে যিনি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন, সেই মামলাকারীকে রাজ্যের রিপোর্টের ব্যাপারে হাইকোর্ট তাঁর বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছে। দু’সপ্তাহ পরে এই মামলার ফের শুনানি।