শ্রীনিকেতনে মাঘ মেলা শুরু সব্জি ও ফলের প্রদর্শনী দেখতে ভিড়
বর্তমান | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
সংবাদদাতা, বোলপুর: রীতি মেনে বৃহস্পতিবার ১০৩তম শ্রীনিকেতন বার্ষিক উৎসব শুরু হল। কুঠিবাড়ি সংলগ্ন ফ্রেস্কো মঞ্চে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য দূষণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল সহ অন্যান্যরা। বিভাগীয় প্রতিবেদন পাঠ, শিল্প সদন ও শিক্ষাচর্চা বিভাগের নিদর্শনপত্র হিসেবে ছাতিমপাতা দেওয়ার পর প্রধান অতিথি ও উপাচার্য বক্তব্য পেশ করেন। রবীন্দ্রসঙ্গীত ও প্রদীপ জ্বালিয়ে বার্ষিক উৎসব তথা মাঘমেলার উদ্বোধন হয়। গ্রামীণ এই মেলার মুখ্য আকর্ষণ বড় আকারের সব্জি ও ফলের প্রদর্শনী। প্রথম দিনেই যা দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। এছাড়া দিনভর বাউল ফকির ও সুফি গানের আসর মেলা প্রাঙ্গণকে জমজমাট করে তুলেছে।
গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশের লক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্রীনিকেতনকে বেছে নেন। ১৯২২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি সেই কর্মযজ্ঞ শুরু করেন। কৃষিজ পণ্যের উৎপাদন, গ্রামীণ হস্তশিল্পের বিকাশ ও লোকসংস্কৃতির হাত ধরে ধীরে ধীরে এটি উৎসবে পরিণত হয়। শ্রীনিকেতন বার্ষিক উৎসব হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এটি মাঘ মেলা হিসেবেই বেশি জনপ্রিয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বিনয়কুমার সরেন এই মুহূর্তে দিল্লিতে রয়েছেন। তাঁর পরিবর্তে এদিন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা ভবনের অধ্যক্ষ তথা কর্মসমিতির প্রবীণ সদস্য নারায়ণবাবু। অনুষ্ঠানের পর তিনি প্রধান অতিথিকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্প ও কৃষি প্রদর্শনী কেন্দ্র ঘুরে দেখেন। শুধু প্রদর্শনী নয়, এবছর মেলায় হস্তশিল্প ও অন্যান্য বিষয়ের মোট ৮৫ টি স্টল হয়েছে বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে।
মূলত, শান্তিনিকেতন এবং শ্রীনিকেতনের সুরুল, মোলডাঙা প্রভৃতি এলাকার হস্তশিল্পীরা এই মেলায় নিজেদের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। পরিবেশ দূষণের বিষয়েও সচেতন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শ্রীনিকেতন কর্মী সঙ্ঘের যুগ্ম সম্পাদক বাপি দাস ও গৌতম সাহা বলেন, মেলায় আসা দোকানদারদের জন্য বায়ো টয়লেটের সুবিধা বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ডোকরা ও দুঃস্থ শিল্পীদের জন্য বিনামূল্যে বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ভিনজেলা থেকে প্রচুর বাউল ও ফকির সমবেত হয়েছেন। ঐতিহ্য ধরে রাখতে পেরে আমরা গর্বিত।