টোল ট্যাক্স ফাঁকি দিতেই মেমারি শহরের ভিতর দিয়ে ছুটছে গাড়ি
বর্তমান | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: পালসিটে টোল ট্রাক্স ফাঁকি দিতে পুরনো জিটি রোড ধরে মেমারি শহরের ভিতর দিয়েই ছুটছে ভারী ট্রাক বা ডাম্পার। অথচ অনেক আগেই পূর্ত দপ্তর এই রাস্তায় ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। স্বভাবতই শুধু মেমারি শহর নয়, রসুলপুর থেকেই যাতায়াত করতে নাভিশ্বাস উঠেছে বাসিন্দাদের। দুর্ঘটনার সংখ্যাও বেড়েছে। যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বর্ধমানের দিক থেকে কলকাতা যাওয়ার পথে পালসিট টোল প্লাজা রয়েছে। সেই রাস্তা দিয়ে না গিয়ে কুড়ি বাইশ চাকার ভারী গাড়িও রসুলপুর থেকে জিটি রোড ধরে মেমারি শহরে আসছে। সেখান থেকে চকদিঘি রোড ধরে মশাগ্রাম ক্রসিং অথবা নুদিপুর মোড় হয়ে জৌগ্রামে আবার হাইওয়েতে উঠছে। কলকাতা থেকে ফেরার পথেও একইভাবে ওই রাস্তা ধরে রসুলপুর পার হয়ে আবার হাইওয়েতে উঠছে। টোল ফাঁকি দিতে পালসিট থেকে মশাগ্রাম ক্রসিং পর্যন্ত মাত্র ছ’কিলোমিটার দূরত্বর বদলে প্রায় ১৪ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে রসুলপুর মেমারি হয়ে যাতায়াত করছে। অথচ ওই রাস্তায় রসুলপুর এবং মেমারিতে দু’টি লেভেলক্রসিং রয়েছে। এই ভারী গাড়ির চাপে পুরনো জিটি রোড, চকদিঘি রোড হয়ে যাতায়াত করাই দুষ্কর হয়ে উঠেছে। কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে চলাচল করতে হয় সাধারণ মানুষকে।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের বন ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জিটি রোড দিয়ে যাতায়াত করতেই ভয় লাগে। দিন রাত সব সময় গাড়ি চলছে। টোলট্যাক্স না দেওয়ায় রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। প্রাণের ঝুঁকি বাড়ছে। এমনিতেই ছোট রাস্তা। যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানাব। পালসিটের এক কর্মী বলেন, দেড় বছর ধরে এই প্রবণতা বেড়েছে। অনেকেই ঘুরপথে জাতীয় সড়ক যাওয়ার রাস্তাটি জেনে গিয়েছে। প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। রসুলপুরের রাস্তা ধরে পণ্য বোঝাই ট্রাক বা লরি যাতায়াত করছে। তবে যারা ওই রাস্তাটি জানে না, তারা মূল সড়ক ধরেই যাতায়াত করছে। রসুলপুর ঢোকার রাস্তায় গাড়ি আটকানো না হলে এই প্রবণতা আরও বেড়ে যাবে। পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলব। ভারী যানাবাহন যাতায়াত করলে রাস্তা বেহাল হয়ে যাবে। তাছাড়া শহরের রাস্তা দিয়ে গাড়ি যাতায়াত করলে দুর্ঘটনা বাড়বে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এই রাস্তাতেও বেপরোয়ভাবে গাড়ি চালানো হয়। রাস্তা পার হতে গিয়ে হামেশাই দুর্ঘটনা ঘটছে। বহুদিন ধরেই এই রাস্তা ধরে গাড়ি যাতায়াত করছে। কিন্তু প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই ওই এলাকা পরিদর্শন করা হবে। শহরের ভেতর দিয়ে ট্রাক বা ডাম্পার ঢোকা যাবে না। টোল না দেওয়ায় রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে। এই অবস্থা বেশি দিন চলতে পারে না।