সংবাদদাতা, কান্দি: টিউবওয়েল মেরামত করার জন্য একই দিনে আট বারে তিন লক্ষ ৮৭ হাজার ২৪৮ টাকা টাকা তুলেছে ভরতপুর পঞ্চায়েত। অথচ টিউবওয়েল মেরামতই করা হয়নি। এই অভিযোগ তুলে বেনিয়মের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ। বৃহস্পতিবার ভরতপুর ১ ব্লকের ভরতপুর পঞ্চায়েতের ছয় সদস্য প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। যদিও পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, সবকিছু নিয়মমাফিক হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত থেকে স্যোশাল মিডিয়ায় একইদিনে পঞ্চায়েতের ব্যাঙ্ক থেকে আটবারে টাকা তোলার স্ক্রিন শট ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, গত ২৮ জানুয়ারি ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের দেচাপড়া শাখায় পঞ্চায়েতের অ্যাকাউন্ট থেকে আটবার টাকা তোলা হয়েছে। প্রতিবারে ৩৮ হাজার ৭৩৪ টাকা করে তোলা হয়েছে। সেই হিসেবে প্রায় পৌনে চার লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে একইদিনে। টাকা তোলার কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, টিউবওয়েল মেরামতির সামগ্রী কেনা। এই ঘটনায় এলাকায় শোরগোল পড়ে যায়।
এরপর এদিন সকালে পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ বিষয়টি নিয়ে ভরতপুর ১ বিডিও অফিসে লিখিত অভিযোগ জমা করতে যান। কিন্তু অফিসের রিসিভ সেকশনে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায় দু’ পক্ষের মধ্যে। রিসিভ সেকশনের কর্মীরা অভিযোগের রিসিভ কপি দিতে অস্বীকার করেন। এনিয়ে প্রায় ২০ মিনিট ধরে উভয়পক্ষের মধ্যে বচসা চলে। রিসিভ সেকশনের কর্মীরা বিডিওর অনুমতি ছাড়া অভিযোগ রিসিভ করতে পারবেন না বলে বার বার জানাতে থাকেন। যদিও পরে অভিযোগকারীদের ‘রিসিভড কপি’ দেওয়া হয়।
পঞ্চায়েত সদস্য উজ্জ্বল শেখ বলেন, টিউবওয়েলের সামগ্রী কেনার টাকা তোলা হয়ে গেল। অথচ পঞ্চায়েত ভবনে সেইসব সামগ্রীই নেই। আবার কোথাও টিউবওয়েল মেরামতিও হয়নি। তাহলে টাকাটা গেল কোথায়। পঞ্চায়েতের পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিল থেকে ওই টাকা তোলা হয়েছে। অভিযোগকারীদের দাবি, টিউবওয়েল মেরামতির সামগ্রী কেনার নাম করে অনিয়ম করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান সহ অফিস কর্মীদের একাংশ। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধান অনিতা মণ্ডল জানান, অভিযোগ ভিত্তিহীন। প্রায় পাঁচমাস আগে টেন্ডার ডেকে সামগ্রী কেনা হয়েছে। পঞ্চায়েতে জায়গা কম বলে ওইসব সামগ্রী দোকানেই রেখে দেওয়া হয়েছিল। এটা নিয়ে পঞ্চায়েতে রেজুউলেশনও করা হয়েছে। তবে বিডিও সাহেবের নির্দেশে দোকান থকে সামগ্রী পঞ্চায়েতে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সব কাজ হয়েছে নিয়মমাফিক। ভরতপুর ১ বিডিও দাওয়া শেরপার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি সাক্ষাত করতে চাননি। তবে কান্দি মহকুমা শাসক উৎকর্ষ সিং জানান, গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। ভরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত। নিজস্ব চিত্র