• গুরুগ্রাম থেকে ধৃত কোকেন কারবারের মাস্টার মাইন্ড নাইজেরিয়ান ‘গুডলাক’
    বর্তমান | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: একাধিক নাম। গুডলাক ওরফে অ্যান্ড্রু লিউ ওবি ওরফে চিমেজি মাওকাম্মা ওরফে জায়েদ আব্বাস ওরফে জিক। ১২ বছর ধরে এমন বেশে হরিয়ানায় ঘাঁটি গেড়ে কোকেন সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছিল নাইজেরিয়ান যুবক। শুধু তাই নয়, কোকেনেরও ছিল একাধিক কোড নেম। কখনও পাউডার, কখনও দাওয়াই, আবার কোক, স্টাফ। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। 


    ‘চিকেন নেক’ শিলিগুড়িকে টার্গেট করতেই রাজ্য পুলিসের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের জালে সেই যুবক। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, শিলিগুড়িকে করিডর করে সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতে কোকেনের কারবারের জাল বিস্তারের ছক কষেছিল নাইজেরিয়ার মাদক সিন্ডিকেট। যার অন্যতম মাস্টার মাইন্ড গুডলাক। 


    টানা তিন সপ্তাহ তদন্ত চালিয়ে ওই নাজেরিয়ান যুবকের নাগাল পায় এসটিএফ। গত রবিবার তাদের একটি টিম হরিয়ানার গুরুগ্রামে হানা দিয়ে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতের উচ্চতা মাঝারি। ইস্পাত কঠিন শরীর। গায়ের রং কালো। হাতে উল্কি। এসটিএফ সূত্রে খবর, ১২ বছর ধরে সে গুরুগ্রামে বাস করছে। সেখানকার সানসিটি অ্যাভেনিউয়ে একটি ফ্ল্যাটে থাকতে। ধৃতের কাছ থেকে দু’টি মোবাইল ফোন ও তিনটি পাসপোর্ট উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি আফ্রিকা, আইভরি কোস্ট ও আমেরিকার। মাদক কারবার জগতে সে একাধিক নামে পরিচিত। সেখান থেকেই গোটা দেশে কারবার নিয়ন্ত্রণ করছিল। 


    পুলিস ও গোয়েন্দাদের নজর এড়াতেই সে একাধিক নামে মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করত। সম্ভবত নাইজেরিয়ার মাদক সিন্ডিকেটের কাছ থেকেই কোকেন সংগ্রহ করত সে। শিলিগুড়িকে করিডর করে উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল ও ভুটানে এই কারবারের জাল বিস্তার করাই ছিল লক্ষ্য। যার এক পুড়িয়ার দাম প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এসটিএফ ধৃতের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য পেয়েছে। 


    পুলিস সূত্রের খবর, ধৃতের নেটওয়ার্ক দীর্ঘ। রাজস্থান, হরিয়ানা, সিকিম সহ বিভিন্ন রাজ্যের ছয় থেকে সাতজনের নাম ধৃতের কাছ থেকে মিলেছে। এছাড়া ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া পাসপোর্টগুলিও সম্ভবত জাল। সে ভারতে এসেছিল ট্যুরিস্ট ভিসায়। সেটিরও মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি খতিয়ে দেখতেই ধৃতকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি এনডিপিএস কোর্টের কাছে আবেদন জানায় পুলিস। 


    মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী নিলয় রায় বলেন, গুরুগ্রাম কোর্ট থেকে ছ’দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে বুধবার ধৃতকে এখানে আনে এসটিএফ। এদিন মামলার কেস ডায়েরি পর্যবেক্ষণ করার পর ধৃতের জামিনের আবেদন নাকচ করে আদালত। ধৃতকে ১০ দিনের জন্য এসটিএফের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 


    প্রসঙ্গত, ১০ জানুয়ারি ৯৩ গ্রাম কোকেন সহ ডাঙিপাড়ার বস্ত্র ব্যবসায়ী মহম্মদ সারতাজ আলম ওরফে আলি ভাইকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। এর সূত্র ধরেই পাসাং মোক্তানকে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। তারা বিভিন্ন সূত্র ও ধৃতদের দেওয়া তথ্য যাচাই করেই নাজেরিয়ান এই যুবকের নাগাল পায়।  ‘গুডলাক’কে নিয়ে যাচ্ছে পুলিস। - নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)