• সাড়ে ৪ লক্ষ কোটির লগ্নি-প্রস্তাব, লক্ষ্য ছাপিয়ে সফল সম্মেলন: মমতা
    বর্তমান | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • বাপ্পাদিত্য রায়চৌধুরী ও প্রীতেশ বসু, কলকাতা: চার লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ আনার ‘টার্গেট’ নিয়ে শুরু হয়েছিল এবারের বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে গেল অনেকটাই। বৃহস্পতিবার সম্মেলনের শেষ লগ্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, এবার সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ কোটি (৪ লক্ষ ৪০ হাজার ৫৯৫ কোটি) টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছেন তাঁরা। বুধবার সম্মেলনের প্রথম দিনেই মঞ্চ থেকে প্রায় ১ লক্ষ কোটির বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছেন শিল্পপতিরা। দু’দিনের সম্মেলন শেষে মোট ২১২টি ‘মউ’ এবং লগ্নির আগ্রহপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। তবে কোন খাতে কত বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে, তা সরকারিভাবে জানানো হয়নি। এই সাফল্যে দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘নতুন প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি ছাড়া বিকল্প পথ নেই। তার জন্য লগ্নি জরুরি। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাই আগামী দিনের ডেস্টিনেশন।’ 


    পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগের জন্য এটাই যে উপযুক্ত সময়, মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে বসিয়ে সম্মেলনের প্রথম দিনেই সেই প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন রিলায়েন্স কর্তা মুকেশ আম্বানি। তিনি যেভাবে রাজ্যের শিল্পভাবনার ‘ব্র্যান্ডিং’ করেছেন, তাতে মুগ্ধ গোটা শিল্পমহল। সেই রেশ বজায় রেখে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই সাফল্য এমনি এমনি আসেনি। গত ১৪ বছরে ধারাবাহিকভাবে যে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে, তারই সুফল পাচ্ছে বাংলা। তাঁর কথায়, ‘এবার পোলট্রি ব্যবসা থেকে উদ্যানপালন, কৃষিভিত্তিক শিল্প যেমন এসেছে, তেমনই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, উৎপাদন শিল্প, এমএসএমই-তেও এসেছে লগ্নি।’ বিগত সাতটি বেঙ্গল গ্লোবাল সামিটে আসা ১৯ লক্ষ কোটির বিনিয়োগ প্রস্তাবের মধ্যে ১৩ লক্ষ কোটির প্রকল্প ইতিমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি আরও জানান, এবার ২০টি দেশ বাণিজ্য সম্মেলনে সরাসরি অংশ নিয়েছে।  


    বুধবারই বাংলায় মোটা টাকা লগ্নির কথা ঘোষণা করেছিলেন শিল্পপতি মুকেশ আম্বানি ও সজ্জন জিন্দাল। ঘোষিত প্রকল্পগুলির পাশাপাশি তাঁরা বাংলার জন্য আরও কিছু উদ্যোগ নিতে চান বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে তাঁদের ব্যক্তিগতভাবে কথা হয়েছে। তাঁরা আরও কিছু করবেন। বেশ কিছু বিদেশি প্রতিনিধির সঙ্গেও কথা হয়েছে। কেনিয়া থেকে ইউ কে, অনেক দেশই বাংলায় লগ্নি করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছে।’ এ রাজ্যে ওএনজিসির উদ্যোগকে তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অশোকনগরে যে খনিজ তেল উত্তোলনের কাজ শুরু হবে, তা বাংলাকে পেট্রলিয়াম মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করবে। এই প্রকল্পের জন্য ওএনজিসি-কে এক টাকায় ১৫ একর জমি দেওয়া হয়েছে।’  শিল্প স্থাপনের জন্য একটি থিতু সরকার ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। মমতার দাবি, তাঁর সরকার দু’টি শর্তই পূরণ করতে পেরেছে। পরবর্তী বাণিজ্য সম্মেলনের জন্য এখন থেকেই প্রশাসনিক প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 
  • Link to this news (বর্তমান)