মাত্র দেড় মিনিটে চারবার টাকা ‘ট্রান্সফার’-সূত্রে রহস্যের সমাধান করল পুলিস
বর্তমান | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নিখোঁজ ব্যবসায়ীর ফোনের কল ডিটেইলস থেকে রুবি এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ—কোনও জায়গা থেকেই ‘ক্লু’ মিলছিল না। শেষমেশ ব্যবসায়ীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেনের তথ্য স্ক্যানারে ফেলতেই তদন্তকারীরা অপরহণ ও খুনের রহস্য উন্মোচনের প্রথম ‘লিড’ পেয়ে যান। তাঁরা দেখেন, রাত ৮টা ৪৯ থেকে পরবর্তী দেড় মিনিটের মধ্যে পরপর চারবার টাকা ‘ট্রান্সফার’ হয়েছে। মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন বলছে, ঠিক ৯টায় ‘সুইচড অফ’ হয়েছে ব্যবসায়ী সোনু রামের ফোন। অর্থাৎ ওই লেনদেনের পরেই বন্ধ হয়ে যায় ফোন। দেড় মিনিটের মধ্যে ব্যবসায়ীর মোবাইলে থাকা ইউপিআই ওয়ালেট থেকে ৪৫ হাজার করে দু’বার এবং ৫ হাজার করে দু’বার, মোট চারবার টাকা ‘ডেবিট’ হয়েছে। অমিত নস্কর নামে এক ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে টাকা।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকা হয় অমিতকে। জেরার মুখে টাকা ঢোকার কথা স্বীকার করে নেন তিনি। কিন্তু কেন তাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে, তা তিনি জানতেন না বলেই দাবি করেন। জানান, সোনুকে তিনি চেনেন। কিন্তু তাঁকে তিনি কোনও টাকা ধার দেননি। কোনও টাকা ফেরত পাওয়ার কথাও ছিল না। কেন এত টাকা ঢুকল, তা জানার জন্য সোনুকে ফোনও করেছিলেন অমিত। ততক্ষণে ‘সুইচড অফ’ হয়ে গিয়েছে তাঁর ফোন। এর কিছুক্ষণের মধ্যে অপহরণ ও খুনের ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ অনুপ মণ্ডল ও দীপ হালদার ফোন করে অমিতকে। তারা জানায়, এই ১ লক্ষ টাকা সোনু পাঠিয়েছে তাদের জন্য। তারা পরে ওই টাকা সংগ্রহ করে নেবে। এরপরেই পুলিস ঘটনার দিন অনুপ ও দীপের মোবাইল নম্বরের লোকেশন ট্র্যাক করে। দেখা যায়, দুই অভিযুক্ত ও সোনুর লোকেশন একই জায়গায় ছিল। তখন ধৃতদের গ্রেপ্তার করে পুলিস। জেরায় অনুপ জানিয়েছে, বছরখানেক আগে তেকেই অপহরণের প্ল্যান কষতে শুরু করে সে। সোনুর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই সে জানতে পেরেছিল, জমিবাড়ির দালালি বাবদ অনেক টাকা হাতে এসেছে তাঁর। সেই টাকা হাতানোই ছিল তার উদ্দেশ্য।