• দিনভর উৎকণ্ঠার পর সন্ধ্যায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বন দপ্তর
    এই সময় | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • অরূপকুমার পাল, ঝাড়গ্রাম

    সারা দিন উৎকণ্ঠার শেষে সন্ধ্যায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বনদপ্তর ও পুলিশের কর্তারা। সারা দিন লাগোয়া গ্রামে দাপিয়ে বেড়ানো দলছুট দাঁতাল হাতি কখন ঝাড়গ্রাম শহরের মধ্যে যাতে ঢুকে পড়ে পড়ে, সেই আশঙ্কায় করা হয়েছিল দ্বি-স্তরীয় ব্যারিকেড। হাতির

    হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে ওই এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছিল ১৬৩ নম্বর বিএনএস। আর হাতি দেখতে গিয়ে নিজেরা পড়ে গিয়ে জখম হলেন দুই গ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার ভোর থেকে দিনভর এমনই ঘটনার সাক্ষী থাকলেন ঝাড়গ্রাম শহর লাগোয়া রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কন্যাডুবা গ্রামের বাসিন্দারা।

    বনদপ্তর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোররাতে লালগড় রেঞ্জ থেকে দু’টি মাদি হাতি ও একটি দাঁতাল হাতি কংসাবতী নদী পেরিয়ে ঝাড়গ্রামের দিকে চলে আসে। যদিও মাদি দু’টি হাতি নদী পেরিয়ে ফের লালগড় রেঞ্জে ফিরে গেলেও দাঁতাল হাতিটি আলুর খেতে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় আর ফিরে যায়নি।

    উল্টে সে ক্রমশ গ্রাম ছাড়িয়ে ঝাড়গ্রাম শহরের অভিমুখে হাঁটা দেয়। তারপর সেখান থেকে সোজা রাধানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের কন্যাডুবা গ্রামে এসে ঢুকে পড়ে। গ্রামে হাতি ঢুকে পড়ায় পটকা ফাটান বাসিন্দারা এবং চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। তখন মারমুখী হয়ে তাড়া করে দাঁতালটি। শেষমেষ সকালে কন্যাডুবা, বেতকুন্দ্রি গ্রাম হয়ে নহড়খাল পেরিয়ে ঝাড়গ্রাম পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নামো জামদা সংলগ্ন পচাখালি গ্রামে হাজির হয়। সেখান থেকে ঝোপ–জঙ্গলের মধ্যে ঢুকে পড়ে হাতিটি।

    এই পরিস্থিতিতে বনদপ্তর ও পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। প্রায় তিন–চার হাজার লোক জমে যায় হাতি দেখার আনন্দে। জমিতে নিজেই পড়ে গিয়ে দু’জন ’জখম‘ হন। তারপর দু'জনকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

    সকাল ছ'টা থেকে বিকেল ছ'টা পর্যন্ত হাতিটি পচাখালি ঝোঁপের মধ্যেই ছিল। তারপর মশাল বাহিনী হাতিটিকে তাড়িয়ে কংসাবতী নদী পার করে দেয়। ঝাড়গ্রামের ডিএফও উমর ইমাম বলেন, ‘হা০তির কাছে সহজেই মানুষজন যাতে না পারে সে জন্য দ্বি-স্তরীয় ব্যারিকেড করা হয়েছিল। প্রথম ব্যারিকেডে হাতি তাড়ানোর জন্য

    প্রশিক্ষিত বনকর্মী এবং দ্বিতীয় সাধারণ মানুষের ভিড় কন্ট্রোল করার জন্য বনকর্মী ও পুলিশ ছিল। যে দু'জন জখম হয়েছেন তাঁরা কেউ হাতির দ্বারা আহত হননি। নিজেরা পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সারাদিন হাতিটিকে কর্ডন করে রাখা হয়েছিল যাতে হাতি শহরের মধ্যে ঢুকতে না পারে। বিকেলে হাতিটিকে তাড়িয়ে অন্যত্র পাঠানো হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)