• ধৃত হেলা বহুতলের প্রোমোটার, বাড়ি সোজা করার পরীক্ষা শুরু
    আনন্দবাজার | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
  • ট্যাংরায় পরস্পরের দিকে হেলে যাওয়া দু’টি বাড়ির একটির প্রোমোটারকে মঙ্গলবারই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। বুধবার ধরা হল দ্বিতীয় বাড়িটির প্রোমোটারকে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতের নাম সুরজিৎ মান্না। বছর পঞ্চাশের সুরজিৎ গত ১৩ দিন ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। কিন্তু টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় বুধবার রাতে বাসন্তী হাইওয়ের কাছে ছেলের সঙ্গে দেখা করে টাকা নিতে আসেন। তখনই তাঁকে ধরে ট্যাংরা থানার পুলিশ। এই নিয়ে হেলা বাড়ির ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ। এর আগে বাঘা যতীনে বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনায় সেটির প্রোমোটার এবং যে সংস্থা হেলা বাড়িটি সোজা করার কাজ নিয়েছিল, সেই সংস্থার প্রধানকে ভিন্‌ রাজ্য থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    বাঘা যতীনে বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই শহরে একের পর এক হেলা বাড়ির খোঁজ মিলেছে। ২২ জানুয়ারি সামনে আসে ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডে ট্যাংরা এলাকার ক্রিস্টোফার রোডের দু’টি হেলা বহুতল। এর মধ্যে একটি নির্মীয়মাণ, অন্য বহুতলে বাসিন্দারা থাকেন। জানা যায়, কয়েক মাস আগেই নির্মীয়মাণ বহুতলটি তৈরির কাজ শুরু হয় এবং কয়েক দিনেই হেলে পড়ে। এর পরে হেলতে শুরু করে পাশের বহুতলটিও। দ্রুত একটি বহুতল ফাঁকা করানো ও নির্মীয়মাণ বহুতলটি ভাঙার সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা পুরসভা। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে ওই নির্মীয়মাণ বহুতল ভাঙার কাজও শুরু হয়। কলকাতা পুরসভার মেয়র জানান, দু’টি বহুতলই বেআইনি ভাবে তৈরি। কিন্তু বহুতলটি ভাঙতে গিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভের মুখে পড়েন পুরকর্মীরা। স্থানীয়দের অনেকেরই প্রশ্ন, কষ্টার্জিত অর্থে ওই নির্মীয়মাণ বহুতলে ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেটি ভাঙা হলে তাঁরা থাকবেন কোথায়? যদিও কোনও মতে তাঁদের বুঝিয়ে এর পরে বহুতল ভাঙার কাজ শুরু হয়।

    এর মধ্যে যে বহুতলে বাসিন্দারা থাকছিলেন, তার প্রোমোটার রজত লি-কে পুলিশ গ্রেফতার করে তিলজলার নুরানি মসজিদের কাছ থেকে। কয়েক দিন তিনি সেখানেই লুকিয়ে ছিলেন। সেই সঙ্গে খোঁজ চলছিল সুরজিতের। পুলিশ সূত্রের খবর, গোপন সূত্রে জানা যায়, নানা জায়গায় ঘুরতে ঘুরতে টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে সুরজিতের। তাই বাসন্তী হাইওয়ের কয়লা ডিপো এলাকায় তিনি ছেলের সঙ্গে দেখা করে টাকা নিতে আসছেন। দ্রুত প্রগতি ময়দান থানার পুলিশের সঙ্গে রাত ১১টা নাগাদ সেখানে পৌঁছয় ট্যাংরা থানার পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ সেখানে সুরজিৎ পৌঁছলে তাঁকে ধরা হয়। এর আগে একাধিক বার তাঁকে থানায় ডাকা হলেও হাজিরা দেননি।

    এ দিকে ক্রিস্টোফার রোডে হেলে থাকা যে বহুতলে বাসিন্দারা রয়েছেন, সেটিকে সোজা করানো যায় কী ভাবে, তা পুরসভার তরফে দেখা শুরু হয়েছে বলে এ দিন জানালেন বাসিন্দারা। এই কাজে হরিয়ানা থেকে লোক আনা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। রিনা দাশগুপ্ত নামে ওই বহুতলের এক বাসিন্দা বললেন, ‘‘বাড়ির দেওয়ালে চাপড় মেরে মেরে দেখছেন ওই সংস্থার লোকজন। তাঁরা তো বলছেন, সোজা করে দেওয়া যাবে। কিন্তু কত দিনে হবে কে জানে! এ দিকে জল ও আলোর সংযোগ নেই। অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে আমরা আছি।’’

  • Link to this news (আনন্দবাজার)