জীবনের প্রথম বোর্ড পরীক্ষা মাধ্যমিক। তার আগে পরীক্ষা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই টেনশনে থাকেন ছাত্রছাত্রীরা। তবে এর পাশাপাশি জঙ্গলমহলের পড়ুয়াদের মাথায় থাকে বাড়তি চিন্তা। পরীক্ষা কেন্দ্রে ঠিকমতো পৌঁছনো যাবে তো? হাতি রাস্তা আটকে দাঁড়াবে না তো? পড়ুয়াদের এই চিন্তা থেকেই মুক্তি দিতে উদ্যোগ জেলা প্রশাসনের।
জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী জানিয়েছেন, পরীক্ষার্থীদের সুরক্ষার জন্য বনদপ্তরকে আগেই সতর্ক করা হয়েছে। হাতির করিডরে রয়েছে জঙ্গলমহলের ছয়টি স্কুল যেখানে এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে। সেই স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে পৌঁছতে পারে তার জন্য সতর্ক করা হয়েছে বনদপ্তরকে। পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে এবং বাড়ি ফিরতে পরীক্ষার্থীদের যাতে কোন সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। যে কোনও সমস্যায় জেলা প্রশাসন পড়ুয়াদের পাশে রয়েছে বলে আশ্বস্ত করেছেন জেলাশাসক খুরশিদ আলী কাদেরী।
অপরদিকে, বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, হাতির হামলা রুখতে পরীক্ষার দিনগুলিতে জঙ্গলের রাস্তায় তথা জঙ্গল অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে হাজির থাকবেন বনকর্মীরা। যে কোনও পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তাদের সঙ্গে থাকবে হাতির হানা রোখার জন্য তৈরি বিশেষ গাড়ি ‘ঐরাবত’। জেলার ওই ছ'টি পরীক্ষা কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের হুটার বাজিয়ে বিশেষ কনভয়ে, বাস বা ছোট গাড়িতে করে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেবে বনদপ্তর।
আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। জেলাশাসক জানিয়েছেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এ বারে পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৫২ হাজার ৮৯২। তার মধ্যে ছাত্র ২৪৬৭৬ এবং ছাত্রী ২৮২১৬ জন। গতবছরের তুলনায় পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৬২৪। গতবছর পরীক্ষার্থী ছিল ৫১ হাজার ২৬৮। জেলায় এবার সর্বাধিক পরীক্ষার্থী খড়্গপুর মহকুমাতে, ২৪০৭১ জন। মেদিনীপুর ও ঘাটাল মহকুমায় পরীক্ষার্থী যথাক্রমে ১৬৯৭৮ এবং ১১৮৪৩। সুষ্ঠুভাবে যাতে জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয় এবং পরীক্ষার্থীরা নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিতে পারে; সেই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের তরফে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।