ই-সাক্ষ্য অ্যাপ, রাজ্য পুলিশের নয়া উদ্যোগ, কোন কাজে লাগবে?
আজকাল | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: যেতে হবে না আদালত পর্যন্ত, ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমেই কোনও মামলায় পুলিশ অফিসার বা পুলিশকর্মীরা এবার ডিজিটাল উপায়ে সাক্ষ্য দিতে পারবেন। সেই ব্যবস্থাই চালু করতে চলেছে রাজ্য পুলিশ। এমনটাই জানিয়েছেন ভবানী ভবনের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। নতুন এই অ্যাপের নাম 'ই-সাক্ষ্য'।
ভবানী ভবন সূত্রের খবর, আদালতে উপস্থিত না হয়ে নিজের ইউনিটে বসে কোনও ঘটনার সাক্ষ্য দিতে পারবেন সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মী।
নয়া এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য পুলিশ সমস্ত থানার সঙ্গে আদালতের ভিডিও সংযোগের প্রস্তাব ভবানী ভবনের তরফে নবান্নে পাঠানো হয়েছে। সেখানে রাজ্যের বিভিন্ন আদালত-সহ ৬০০টি ইউনিটে এই ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই অ্যাপের প্রচলন অন্য রাজ্যে থাকলেও পশ্চিমবঙ্গের এর ব্যবহার ছিল না। এবার শুরু হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গেও।
একাধিক ঘটনার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, পুলিশকর্মীরা ব্যস্ত থাকার কারণে আদালতে গিয়ে অনেক মামলায় সাক্ষ্য দিতে পারেন না। এতে গোটা বিচার প্রক্রিয়াই বিলম্বিত হয়। সেই কারণে এই পাদক্ষেপ রাজ্য পুলিশের। এতে যেমন সময় বাঁচবে, তেমনই বিচার প্রক্রিয়াও দ্রুত হবে।
সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে পুলিশকর্মীদের গুলি করে পালিয়ে গিয়েছিল এক বিচারাধীন বন্দি। পরে অবশ্য সে পুলিশের গুলিতে মারা যায়। ওই ঘটনার তদন্তে উঠে আসে, আদালত চত্বরেই ওই বিচারাধীন বন্দিকে বন্দুক সরবরাহ করেছিল আর এক দুষ্কৃতী। সেই ঘটনার পরেই বিচারাধীন বন্দিদের আদালতে সশরীরে হাজির না করে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পেশ করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। গোটা রাজ্য জুড়ে আপাতত এই কাজ চলছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বর্তমানে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই বিচারাধীন বন্দিদের আর আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। বদলে তাঁদের বিচারকের সামনে হাজির করানো হচ্ছে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, ১০০ শতাংশ বিচারাধীন বন্দিকেই যাতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের সামনে হাজির করানো যায়, আদালতের সঙ্গে আলোচনা করে সেই চেষ্টা চলছে।
তবে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত, এই অ্যাপের মাধ্যমে ভিডিওগ্রাফিতে অর্থাৎ ডিজিটালই পুলিশের সাক্ষ্য প্রমাণ কতটা সহযোগী হবে বা সেটা সম্ভব কিনা তা বিচার্যের বিষয়। কারণ যেকোনও ট্রায়ালের ক্ষেত্রে পুলিশের তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে উপস্থিত হওয়াটাও জরুরী। এবং আদালত এই বিষয়ে কতটা সহমত হবেন সেটাই দেখার।