টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: জেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন ঘিরে নজিরবিহীন অশান্তি বাঁকুড়ায়। অনুষ্ঠানে ডেকে মন্ত্রীকে অপমানের অভিযোগ উঠলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ক্ষুব্ধ মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডি সংবর্ধনা গ্রহণ না করেই মঞ্চ থেকে নেমে গেলেন! শুক্রবার এনিয়ে একপ্রস্ত চাপানউতোর চলল বাঁকুড়ায়। মন্ত্রীর সঙ্গে এহেন আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকেই। যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরার সাফাই, নির্ধারিত সময়েই অনুষ্ঠান হয়েছে।
শুক্রবার বাঁকুড়া জেলার প্রাথমিক স্কুলগুলিকে নিয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল ডিপিএসসি অর্থাৎ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। তার উদ্বোধনে আমন্ত্রণ জানানো হয় মন্ত্রী তথা রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মাণ্ডিকে। আমন্ত্রণপত্রে সময় লেখা ছিল সকাল ৯টায়। তবে পরবর্তী সময়ে মন্ত্রীর সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কথোপকথন হলে সময়ের সামান্য হেরফের হয়। সেইমতো এদিন মন্ত্রী সাড়ে ১০টা নাগাদ উপস্থিত হন বাঁকুড়া স্টেডিয়ামে, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। কিন্তু দেখেন, সবই হয়ে গিয়েছে। তাতে ক্ষুব্ধ হন তিনি। মঞ্চে সংবর্ধনাও গ্রহণ না করে জ্যোৎস্না মাণ্ডি নেমে যান। তাতে প্রতিযোগিতার তাল কিছুটা কেটে যায়।
এনিয়ে মন্ত্রী জ্যোৎস্না মাণ্ডি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, ”আমার মনে হয়েছে, আজ আমাকে ডেকে অপমান করা হল। আমার সঙ্গে গতকালও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কথা হয়েছে। তাঁকে বারবার জিজ্ঞেস করেছি, কটার মধ্যে যেতে হবে। তিনি জানান, সাড়ে ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে গেলেই হবে। সেইমতো আমি কলকাতা থেকে ছিক সাড়ে ১০টায় পৌঁছে গেছি। কিন্তু গিয়ে দেখি, আমাকে ছাড়াই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন হয়ে গিয়েছে, খেলাধুলোও চলছে। আমি আর ওখানে থাকিনি। কারণ, এটা তো আমার পক্ষে অপমানজনক।”
মন্ত্রীর এই ‘অপমানবোধ’ নিয়ে বক্তব্যের পালটা প্রতিক্রিয়া কিন্তু অনেকটাই শান্তভাবেই দিলেন ডিপিএসসি চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। তাঁর কথায়, ”সকাল ৯টার সময়ে উদ্বোধনের কথা ছিল। কারণ, এখানে অনেক স্কুলের হাজার হাজার প্রতিযোগী অংশ নিচ্ছে। সময়মতো খেলাধুলো শুরু না হলে অসুবিধা হতো। তাই আমরা ৯টাতেই উদ্বোধন করে দিয়েছি। উনি কলকাতায় ছিলেন, আসতে তাই একটু সময় লেগেছে। তবু আমরা তাঁকে মঞ্চে ডেকে সংবর্ধনা দিতে চেয়েছিলাম। উনি তা নেননি।” অর্থাৎ মন্ত্রীর ‘অপমান’ মানতে নারাজ তিনি।