বিক্ষোভের সুর মুছে স্থানীয়দের হর্ষধ্বনিতে মুখর দেউচা-পাচামি, শুরু খননকাজ
প্রতিদিন | ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
নন্দন দত্ত, সিউড়ি: বীরভূমের মহম্মদবাজারে দেউচা-পাচামি কয়লাখনি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেল শুক্রবার থেকে। গতকাল বৃহস্পতিবার সামান্য বিক্ষোভ দেখা গিয়েছিল। আজ সেই বিক্ষোভ বদলে গেল হর্ষধ্বনিতে। এদিন দুপুর থেকে ওই এলাকায় মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হল।
এই কাজের বরাত পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ডেভেলপমেন্ট কোল লিমিটেড (পিডিসিএল)। এদিন পিডিসিএলের রাজ্যের চেয়ারম্যান পিবি সেলিম, রাজ্যসভার সাংসদ হামিরুল ইসলাম, জেলাশাসক বিধান রায়, পুলিশ সুপার আমন দীপ-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। দুপুর থেকে চারটি মেশিন দিয়ে এই মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হল। আগামী দিনে আরও মেশিন ও যন্ত্রাংশ সেখানে এসে পৌঁছবে বলে জানা গিয়েছে। এলাকায় নিরাপত্তার খাতিরে এদিন অনেক বেশি পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিল।
গতকাল জেলাশাসক, পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে ভিতপুজো হয়েছিল। একটা পক্ষ বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। কিন্তু এদিন আর কোনও বিক্ষোভই দেখা যায়নি। বরং স্থানীয়রাও সেখানে উপস্থিত থেকে দ্রুত কাজের অগ্রগতির দাবি তুলেছেন। পিডিসিএলের চেয়ারম্যান পিবি সেলিম জানিয়েছেন, এখন থেকে দিনরাত কাজ চলবে। জমি সমস্যার সমাধানও হয়ে যাবে। জেলাশাসক বিধান রায় জানান, মানুষ কাজের দাবি তুলেছেন। সেই দাবিপূরণের চেষ্টা চলছে। ওই এলাকার চারটি গ্রামে চারটি ক্যাম্প করা হয়েছে। মানুষদের দাবি শোনা হচ্ছে। সমস্ত রকম জটিলতা কাটিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চলছে।
মহম্মদবাজারের মথুরাপাহাড়ি চান্দা এলাকার বাসিন্দারাও চাইছেন ওই এলাকায় কয়লাখনি হোক। শুধু তাই নয়, তাঁরাও কাজ পাক। প্রশাসনও এই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। আপাতত মাটি কাটার কাজে ২৪ জনকে নিযুক্ত করা হয়েছে। সেই সংখ্যা আগামী দিনে আরও বাড়বে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন, এলাকার নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
সদ্য শেষ হওয়া বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের প্রথম দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বীরভূমে দেউচা-পাচামি কয়লাখনির কথা উল্লেখ করেন। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই কয়লাখনিতে ২১০ কোটি ২০ লক্ষ টন কয়লা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পরিকাঠামো একেবারে তৈরি। চাইলে বৃহস্পতিবার থেকেই সেখানে কাজ শুরু করা যেতে পারে।” সেই বক্তব্যের পর থেকে দেউচা-পাচামিতে কাজ শুরু হয়েছে।