গরু পাচার মামলায় ফের অনুব্রত মণ্ডলের কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি। বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় ওই তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, অনুব্রত, তাঁর পরিবার, সহযোগী সংস্থাগুলির স্থাবর সম্পত্তি প্রাথমিক ভাবে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অনুব্রতদের নামে থাকা ৩৬টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে মোট জমা অর্থের পরিমাণ ২৫ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকা।
ইডি জানিয়েছে, গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের দায়ের করা এফআইআরের ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু করে তারা। সেই এফআইআরে নাম ছিল বিএসএফের প্রাক্তন কর্তা সতীশ শর্মা, এনামুল হকদের। তাঁদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অবৈধ ভাবে গরু পাচার করার অভিযোগ ছিল। সেই মামলাতেই নাম জড়ায় অনুব্রত এবং তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। অভিযোগ, গরু পাচারের টাকা যেত অনুব্রতের কাছে। তদন্তে নেমে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হন সুকন্যাও।
গরু পাচার মামলায় এনামুলকে ‘কিংপিন’ বলে দাবি করা হয়েছিল। অভিযোগ, অনুব্রতের তৎকালীন দেহরক্ষী সেহগল হোসনের মাধ্যমেই এনামুলের কাছ থেকে টাকা যেত কেষ্টর কাছে। ইডি জানিয়েছে, গরু পাচারের টাকা অনুব্রতের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ত। শুধু অনুব্রতের নয়, তাঁর পরিবারের সদস্য এবং সহযোগীদের অ্যাকাউন্টেও আসত টাকা। অনুব্রতের সেই সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কাজ চলছে। অতীতেও অনুব্রতের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, গরু পাচার মামলায় এখনও পর্যন্ত ৫১ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
২০২২ সালের ১১ অগস্ট গরু পাচার মামলায় বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ি থেকে অনুব্রতকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তার পর থেকে বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি জেলবন্দি ছিলেন। প্রথমে আসানসোল সংশোধনাগারে রাখা হয়েছিল তাঁকে। পরে ইডির মামলায় তিহাড় জেলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। ২০২৩ সালের ২১ মার্চ থেকে তিহাড়েই বন্দি ছিলেন তিনি। আর ২০২৩ সালে ওই গরু পাচার মামলাতেই তাঁর কন্যা সুকন্যাকেও গ্রেফতার করে ইডি। তাঁরও ঠাঁই হয়েছিল তিহাড় জেলে। গত বছর সেপ্টম্বরের ২০ তারিখ জামিন পান অনুব্রত। তার আগেই জামিন পেয়েছিলেন সুকন্যা। বীরভূমে ফিরে আবার সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে জুড়েছেন অনুব্রত। সেই আবহেই ইডি তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কথা জানাল।